ধীমান রায়, কাটোয়া: কাটমানি ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’মাস আগেই স্থানীয়দের কাছে মুচলেকা দিয়েছিলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি৷ কিন্তু এখনও সেই টাকা ফেরত পাননি কেউ৷ ফলে প্রবল রোষে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ফের কাটমানি ফেরতের দাবিতে পোষ্টার লাগালেন এলাকাবাসী। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুক্রবার সকাল থেকে চাঞ্চল্য ছড়াল আউশগ্রামের পাণ্ডুক গ্রামে৷
[ আরও পড়ুন: চোরাচালান রুখতে সচেষ্ট বিএসএফ, কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল]
স্থানীয় সূত্রে খবর, শক্রবার গোটা গ্রামজুড়ে কাটমানি পোস্টার দেখতে পান এলাকাবাসী৷ যাতে লেখা রয়েছে, ‘‘গত ২৩ জুন ২০১৯, গ্রামের ২১ নম্বর বুথের সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডল লিখিত মুচলেকা দেওয়া সত্বেও আজ অবধি উপভোক্তাদের টাকা ফেরত দিল না কেন?” তলায় লেখা পাণ্ডুক গ্রামবাসীবৃন্দ। একই সঙ্গে অপর পোষ্টারে লেখা, ‘‘অঞ্চল সভাপতি আসগর শেখ সব দেখে শুনে নীরব কেন? উত্তর চাই। উপভোক্তাদের টাকা ফেরতের দাবিতে আন্দোলন চলছে চলবে।” জানা গিয়েছে, এই খবর পাওয়া মাত্রই গ্রামগুলিতে যায় আউশগ্রাম থানার পুলিশ। কিছু পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে দেন তাঁরা৷ কিছু পোস্টার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কায় এলাকায় টহলদারি বাড়ায় পুলিশ।
[ আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড, প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি রোগীদের ]
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০০ দিনের প্রকল্পে শ্রমিকদের মজুরি এবং সরকারি আবাস যোজনায় ৪০ লক্ষ টাকার কাটমানি আত্মসাৎ করেছে অভিযুক্ত বুথ সভাপতি৷ চাপে পড়ে ২০ দিনের মধ্যে কাটমানির ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিলেও, দু’মাস অতিক্রম করে গেলেও কাটমানির টাকা ফেরত পাওয়া যায়নি৷ আউশগ্রামের রামনগর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি আসগর শেখ বলেন, ‘‘উজ্জ্বল মণ্ডল নামে আমাদের ওই কর্মী কারও কাছে কাটমানি নেননি। কিছু চাঁদা হয়ত নিয়েছিলেন। সেই টাকা বিপদগ্রস্ত মানুষদের উপকারেই খরচ হয়েছিল। তাই কাটমানি ফেরতেরও কোনও প্রশ্ন নেই।”
পাশাপাশি আসগর শেখের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর
উদ্দেশ্যে এসব করছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ায়, ঝামেলার রাস্তা খুঁজছে বিজেপি।” যদিও বিজেপির ব্লক স্তরের নেতা দেবব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলের নেতারা গরিব গ্রামবাসীদের কাছে কাটমানি আদায় করেছিলেন, এটা সকলেই জানেন। তাই গ্রামবাসীরাই কাটমানি ফেরতের জন্য আন্দোলন করছেন।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।