অর্ণব দাস, বারাসত: ভরদুপুরে আচমকাই পরিবেশ বদল। শান্ত এলাকায় দাউদাউ জ্বলে উঠল আগুনের গোলা। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেল আকাশ। পর পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মুহূর্তের মধ্যেই এমন ভয়াবহ পরিবেশ উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুদিন ধরে বেআইনিভাবে গ্যাসের কারখানা চলছিল এলাকায়। সেখানেই আচমকা সিলিন্ডার ফেটে যায়। পর পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠেন এলাকাবাসী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি সিলিন্ডার ফেটে অর্ধেকাংশ কার্যত উড়ে গিয়ে পড়ে পাশের বাড়িতে। তার পরই দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আমডাঙার উলুডাঙা এলাকায় বেআইনি গ্যাস কারখানায় পর পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে থাকে। দাউ দাউ জ্বলে ওঠে আগুন। আশপাশের বাড়িতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের পর আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে মাঠে আশ্রয় নেন এলাকাবাসী। ঘটনার প্রায় আধঘন্টা পরও দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। পরে অবশ্য দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন ও আমডাঙা থানার পুলিশ পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাইকিং করে সকলকে সতর্ক করে পুলিশ। ফলে যানজট তৈরি হয়।
ঘটনার জেরে তীব্র আতঙ্কে এলাকাবাসী। কুতুবুদ্দিন নামে এক বাসিন্দার কথায়, ”এখানে একটা বাড়িতে গ্যাসের কারখানা। এখান থেকে আশেপাশে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এটি বেআইনি না আইনি, তা আমরা বলতে পারব না। তবে এমন কারখানা তো বাড়িতে হওয়া উচিত নয়। আশপাশে এত বাড়ি আছে, সেসব তো ঝুঁকির মধ্যে থাকে। যেমন আজকের ঘটনায় বাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হল। পুলিশ, দমকলকে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছিল না।” আরেক বাসিন্দা আজগর আলি বলছেন, ”ঘরে ব্যবহৃত সিলিন্ডারগুলিকে এখানে বাণিজ্যিক সিলিন্ডার করে বিক্রি করা হয়। ১৪০০ টাকার সিলিন্ডার ২৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এসব বন্ধ করা হোক। নাহলে বিপদ বাড়বে।” এমনিতেই আমডাঙা রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত এলাকা। তার উপর এই ঘটনায় বেআইনি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.