ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: জিটিএর অডিট ঘোষণার পরই পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলন হিংসাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। অডিট প্রক্রিয়া শুরু হতে আরও ক্ষেপে যায় গুরুংয়ের দল। এই আবহে জিটিএর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের সদর কার্যালয়ের আগুনের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। অফিসে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নথি ভস্মীভূত। প্রমাণ লোপাটেই কি এমন কাজ করল মোর্চা। এর জবাবে পাহাড়ের দলটির দাবি এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। মোর্চার তাণ্ডবের আগুনে পুড়েছে দার্জিলিংয়ের চারটি পঞ্চায়েত।
[জিটিএ চুক্তিপত্র পুড়িয়ে মোর্চার ‘জেহাদ’, শরীরে টিউবলাইট ভেঙে প্রতিবাদ]
পাহাড়ে অশান্তির সূত্রপাত জিটিএর অডিটের সিদ্ধান্ত ঘিরে। যার সঙ্গে কৌশলে গোর্খাল্যান্ডের দাবি ঝুলি থেকে বের করে মোর্চা। জিটিএ তাদের কাছে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বুধবার ঘটা করে জিটিএ চুক্তির প্রতিলিপি তারা পাহাড় জুড়ে পোড়ায়। জিটিএ নিয়ে তরজার মাঝে জিটিএর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের সদর কার্যালয়ে আগুন লাগানোর ঘটনায় পাহাড়জুড়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। ওই অফিসে জিটিএর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল। আগুনে সমস্ত নথি এবং আসবাবপত্রগুলি ছাই হয়ে গিয়েছে। লালকুঠি লাগোয়া ওই অফিসে বুধবার রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোর্চার দিকে আঙুল উঠেছে। ইতিমধ্যে জিটিএ নিয়ে রাজ্য সরকার অডিট শুরু করেছে। পিডব্লুডির টিমও অডিটে যোগ দিচ্ছে। অভিযোগ, দুর্নীতির তথ্য লোপাট করতেই আগুন লাগানো হয়। জিটিএর এই ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের কাজ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। পার্কিং প্লাজা ও হকার্স কর্নারের প্রজেক্ট নিয়ে অসঙ্গতির অভিযোগ ছিল। সূত্রের খবর, ধরার পড়ার আশঙ্কায় গুরুংয়ের দল এই কাজ করেছে। মোর্চা নেতৃত্ব অবশ্য জিটিএর অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
[ভারতীয় জওয়ানদের উদ্বুদ্ধ করতে নতুন গান রেকর্ড সোনুর]
শুধু জিটিএ অফিস নয়, মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের একাধিক অফিসও ছিল মোর্চার নিশানায়। দার্জিলিং সদর থানা এলাকায় রাজবাড়ি পঞ্চায়েত, বিজনবাড়ির ধোবিতলব পঞায়েত এবং রংলি রংলিয়ত ব্লকের দুটি পঞ্চায়েত পোড়ানো হয়। কালিম্পংয়ের ইস্ট মেন রোডে রেশম শিল্পের গোডাউনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এই তাণ্ডবের মধ্যে ২৯ জুন মোর্চার ডাকে তৃতীয় দফার সর্বদল বৈঠক। এই বৈঠক জিমখানা ক্লাবে হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার রাতে আচমকা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দার্জিলিংয়ে বাইরে মিটিং হবে। বৈঠকের স্থান ঠিক করা হয়েছে কালিম্পং। যেখানে থাকেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী। সূত্রের খবর, হরকাকে বৈঠকে এবং আন্দোলনে সামিল করতেই জায়গা বদল করেছে মোর্চা। এদিকে মোর্চার কোর কমিটির বৈঠক বসছে পাতলেবাসে। যেখানে থাকার কথা বিমল গুরুংয়ের। মোর্চা সুপ্রিমোর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। মোর্চার সঙ্গী দলগুলির প্রশ্নের জবাব কীভাবে দেওয়া হবে তাও ঠিক হবে এই স্ট্র্যাটেজি বৈঠকে।