ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বনধ নিয়েও পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের এবার ধর্মের তাস। খানিকটা ডিগবাজিও খেল মোর্চা। কিছুদিন আগেও ইদে বনধ শিথিল নিয়ে অনড় থাকলেও, বনধে সাময়িক ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি । সোমবার ১২ ঘণ্টার জন্য বনধ শিথিল করা হয়েছে। তবে বনধে ছাড় দিয়েও অনেক শর্ত জুড়ে দেওয়ায় বিভ্রান্তি বেড়েছে। পাহাড়ে কৌশল বদলেছে মোর্চা। সমতলে, রবিবার গোর্খাল্যান্ডের বিরোধিতায় বিশাল মিছিল হয়। শিলিগুড়ির মিছিলে অখণ্ড বাংলার পক্ষে আওয়াজ ওঠে।
[শাবককে বাঁচাতে দুটি হাতি কী করল জানেন? দেখুন ভিডিও]
শুক্রবার পাতলেবাসে সাংবাদিকদের সামনে অস্তিত্ব প্রমাণে হাজির হয়েছিলেন বিমল গুরুং। মোর্চা সুপ্রিমোর একটাই কথা আগে গোর্খাল্যান্ড, তারপর অন্য কিছু। গোর্খাল্যান্ড নিয়ে অনড় গুরুং জানিয়ে দেন রমজানের কোনও গুরুত্ব নেই তাদের কাছে। মোর্চা সুপ্রিমোর বক্তব্য ছিল, তারা গোর্খাল্যান্ড ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না। নানা মহল থেকে ইদের দিন বনধ শিথিল করার দাবি উঠলেও পাত্তা দেননি গুরুং। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই অবস্থান থেকে সরে এল মোর্চা। পাহাড়ের ধর্মীয় আবেগ আঁচ করতে পেরে রবিবার বনধ সাময়িকভাবে শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি। রমজান মাসে লাঘাতার বনধে মোর্চার ওপর ক্ষুব্ধ সংখ্যালঘুরা। পাহাড়ে প্রায় ২ লক্ষ সংখ্যালঘুর বাস। অনির্দিষ্টকালের বনধের জন্য অনেক সংখ্যালঘু রমজান মাস পালনে সমস্যায় পড়েছিলেন। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ শিলিগুড়ি নেমে আসেন। ইদের দিন বনধ চললে একটি সম্প্রদায়ের কাছে ভুল বার্তা যাবে তা শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারে মোর্চা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা এর ফলে পুরনো অবস্থান থেকে পিছু হটে বিমল গুরুংয়ের দল।
[মোর্চার আন্দোলনের ঐক্যে ‘ফাটল’? বেসুরো জিএনএলএফ, হরকা]
মোর্চার এই বনধ শিথিল নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বনধ ছাড় দেওয়া হয়েছে। বনধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে শুধু সংখ্যালঘুদের গাড়ি। এর জন্য সংখ্যালঘুদের গাড়িতে নির্দিষ্ট স্টিকার সাঁটাতে হবে। পাহাড়ে মোর্চার পিছু হটার দিনে সমতলে সক্রিয় হয়েছে নাগরিক সমাজ। গোর্খাল্যান্ডের বিরোধিতায় শিলিগুড়িতে বিশাল মিছিল হয়। জমায়েতে অখণ্ড বাংলার পক্ষে সওয়াল করা হয়। পাহাড়, সমতল আলাদা নয়। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার বার্তা দেওয়া হয়।