২৩ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  বুধবার ৭ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

দুর্ঘটনায় রোজগেরে ছেলের মৃত্যু, ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ নিয়ে উধাও বউমা

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: February 6, 2018 4:53 pm|    Updated: February 6, 2018 4:53 pm

Daulatabad bus accident: Victim’s wife abandons in-laws, flees with compensation money

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবার কষ্ট হচ্ছে দেখে কাজ ছাড়িয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। স্কুলে শিক্ষকতা করে মা-বাবার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন ছেলে। নাতির প্রতি নির্ভরশীল ছিলেন ঠাকুরদা-ঠাকুরমাও।  দৌতলাবাদের দুর্ঘটনায় এমন এক অভাবী পরিবারের সন্তান চিরতরে হারিয়ে গেলেন। মানস পালের বাস জলে পড়ার মতো তাঁর পরিবারও আক্ষরিক অর্থেই জলে পড়ল। মানসের স্ত্রী ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে বাপেরবাড়িতে চলে গিয়েছেন।

[রেল বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা, মেট্রো সম্প্রসারণ কার্যত হিমঘরে]

ওই বধূ  শুধু শ্বশুরবাড়ি ছাড়েননি কার্যত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। একে পুত্রশোক তার উপর এই ঘটনায় দিশেহারা পাল পরিবার। বলা ভাল, চার বুড়ো-বুড়ি এখন অথৈ জলে। মানস মারা যাওয়ার পর তাঁর জীবন বিমা এবং অন্যান্য বিমার অর্থ পাবেন স্ত্রী পায়েল। তাই পুত্র হারানোর যন্ত্রণার সঙ্গে কীভাবে দিন চলবে বুঝে উঠতে পারছেন না নদিয়ার করিমপুরের পাল পরিবার। মানসের বাবা জয়দেব পাল অনেক কষ্ট করে ছেলের পড়াশোনা করান। ছেলে স্কুল সার্ভিস দিয়ে চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু স্কুলে যাওয়ার পথেই মুর্শিদাবাদের ভাণ্ডারদহ বিলে বাস পড়ে মৃত্যু হয় করিমপুরের মুরুটিয়ার মানস পালের। ঘটনার পর দিনই আর্থিক সাহায্য হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক পেয়েছিলেন মানসের স্ত্রী পায়েল। অভিযোগ টাকা পাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে তিনি বালিয়াডাঙায় বাপের বাড়িতে চলে যান।

[পুলিশের তাড়া থেকে বাঁচতে ভাগীরথীতে ঝাঁপ, খোঁজ নেই ২ শ্রমিকের]

বছর চারেক আগে মুর্শিদাবাদের সুতির একটি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দেন মানস। ছেলের চাকরিতে দিনমজুরি করে সংসার চালানো জয়দেববাবু ভেবেছিলেন সংসারে এবার হাল ফিরল। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে পায়েলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মানসের। তবে ২৯ জানুয়ারির সকালে সব শেষ। করিমপুর থেকে অভিশপ্ত বাসে করে সেদিন স্কুলে যাচ্ছিলেন পাল বাড়ির একমাত্র ছেলে। জয়দেববাবু বুঝতে পারছেন না নব্বই উর্ধ্ব মা-বাবা ও স্ত্রীর জন্য অন্ন কোথা থেকে জোগাড় করবেন। কারণ তাঁর জমিজমাও নেই। পুত্রশোকের পাশাপাশি বউমার এমন সিদ্ধান্তে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। জয়দেববাবুর হতাশার সঙ্গে বলেন, সব জিনিসপত্র নিয়ে আচমকা বউমা বাপেরবাড়ি চলে যান। তাঁদের কোনও অনুরোধই রাখেননি।   পুত্রবধূ চলে যাওয়ায় পালবাড়িতে শোকের পাশাপাশি চেপে বসছে অনিশ্চয়তার আতঙ্ক।  তবে পায়েলের বাপেরবাড়ির তরফে জানানো হয়েছেন স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুতে শকড মেয়ে। তাই কয়েক দিনের জন্য বাপেরবাড়িতে এসেছে। মেয়ের পড়াশোনার জন্য কিছু অর্থ নিয়ে বাকি টাকা শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান  পায়েলের বাবা। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে মানসের বাড়ির তরফে কোনও কিছু জানানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনেকেই বলছেন পাল পরিবারের এই ঘটনা মিলিয়ে দিল মধ্যমগ্রামের অমিতাভ মালিকের বাড়ির সঙ্গে। বিমল গুরংকে ধরতে গিয়ে গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন এসআই অমিতাভ। ঘটনার কয়েক দিন পর অমিতভার স্ত্রী বিউটি পুলিশে চাকরি পান। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে কার্যত শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বিউটি যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। দৌলাতাবাদের বাস দুর্ঘটনায় শিক্ষক মানস পালের মৃত্যু বুঝিয়ে দিল আর্থিক সাহায্য হয়তো আসল। স্বামী  বা সন্তান সেখানে নিমিত্ত মাত্র।

[পাশাপাশি জিএনএলএফ-মোর্চা, পাহাড়ের রাজনীতিতে নজিরবিহীন বার্তা মমতার]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে