নন্দন দত্ত, সিউড়ি: খুন হওয়া পুলিশ অফিসারকেই সাক্ষী হিসাবে রেখেছিল দুবরাজপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনা ঘিরে সরগরম হল সিউড়ি আদালত। যদিও তদন্তকারী অফিসারেরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করে পার পেয়েছেন।
[উলটপুরাণ, আইনজীবীর গাড়িতে ধাক্কা মেরে তাঁকেই খুনের হুমকি ডিএসপির]
২০১৪ সালের ৩ জুন রাজনৈতিক সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুবরাজপুরের টাউন ওসি অমিত চক্রবর্তী জখম হন। একমাস পরে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই মামলা প্রথম থেকেই ছিল নাটকীয়তায় ভরা। পুলিশ আধিকারিকরা সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আদালতে কখনও অভিযুক্তদের চিনতে পেরেছেন। কখনও আবার চিনতে পারেননি। বৃহস্পতিবার সিউড়ি আদালতে অমিত চক্রবর্তী খুনের মামলায় সাক্ষ্যদান পর্বে প্রকাশ্যে আসে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের পেশ করা সাক্ষী তালিকায় দেখা যায় নিহত এসআই অমিত চক্রবর্তীর নাম রয়েছে। যা নিয়ে আদালত চত্বরে রীতিমতো শোরগোল পরে যায়। এই অবস্থায় মামলার তদন্তকারী অফিসার তৎকালীন সিআই অরূপ সরকার বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য দিতে আসেন। আদালতে ওই পুলিশ অফিসারকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবীরা। তড়িঘড়ি ভুল স্বীকার করে নেন ওই পুলিশ অফিসার। এদিন অবশ্য অরূপবাবু ছাড়াও রঞ্জিত বাউড়ি নামে এক পুলিশ কর্মীও সাক্ষ্য দেন। আইনজীবীদের মতে প্রয়াত পুলিশ কর্মীকে খুনের মামলায় স্বাক্ষী হিসাবে দেখানোয় পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। প্রশ্ন ওঠে অমিত চক্রবর্তীর রক্তাক্ত পুলিশের জামাটির ফরেনসিক হয়েছিল কিনা। আইনজীবীরা জানতে চান অস্ত্র আইনে অভিযোগ দায়ের হয়েছে সেক্ষেত্রে জেলাশাসক বা সরকারি আইনজীবীর অনুমোদন আদৌ হয়েছে কি? দুটি ক্ষেত্রেই সাক্ষীরা বলেন, না হয়নি।
[বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষায় গিয়ে বিজিবি’র গুলিতে মৃত্যু যুবকের]
অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, অমিত চক্রবর্তী খুনের মামলায় বিচার পর্ব চলছে। আর তাঁকেই সাক্ষী করেছে পুলিশ! পুলিশ তাহলে কেমন তদন্ত করছে সেটা সবাই বুঝতে পারছেন। তদন্তকারী অফিসার ভুল স্বীকার করছেন বটে। কিন্তু এই তদন্তে তাদের গাফিলতি নিশ্চয়ই রয়েছে”। এই প্রসঙ্গে নিহত এসআই অমিত চক্রবর্তীর স্ত্রী পুতুল সরকার বলেন, অমিত আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর যিনি ইহজগতে নেই তাঁকে সাক্ষী করে কী প্রমাণ করতে চাইছেন? এতে গাফিলতি পরিষ্কার।” অবশ্য সরকারি আইনজীবী তপন গোস্বামী বলেন, “অমিত চক্রবর্তী গুরুতর জখম হওয়ার পর বেশ কিছুদিন বেঁচে ছিলেন। পরে তিনি মারা যান। তদন্তের পর আদালতে পেশ করার সময় তাই সাক্ষীদের নামের তালিকায় ভুল হয়ে গিয়েছে।”