সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! একে মেয়ের মৃত্যুশোক। তার উপর মৃত বধূর শরীর থেকে গায়েব সোনার গয়না। ঘটনায় বিধ্বস্ত পরিবারের সদস্যরা। তীব্র চাঞ্চল্য উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে।
[ মহিলাদের খোঁপা-ফলের মধ্যে দেদারে জেলে ঢুকছে সিম কার্ড, প্রশ্নের মুখে তল্লাশি ]
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় সান্ত্বনা চক্রবর্তী নামে এক গৃহবধূর। হালিশহরের বাসিন্দা সান্ত্বনার বিয়ে হয় সাত বছর আগে। পাত্র অশোকনগর শেরপুর ডিরোজিও পল্লির সুজন চক্রবর্তী। তিন বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে তাঁদের। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ স্বান্তনার বাবাকে সুজন ফোন করে জানায়, তাঁর মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। ক্রমাগত বমি করে চলেছে। শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। সরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছে। সান্ত্বনার বাবাকে তাড়াতাড়ি চলে আসতে অনুরোধ করে সে। মেয়ের বাবা এসে অবশ্য তাঁকে জীবন্ত দেখতে পাননি। দেখেন হাসপাতালে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে।
[ ফাস্ট ফুডের দোকানের আড়ালে দেদার মদ বিক্রি, গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী ]
সান্ত্বনার পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সুজন-সান্ত্বনার পরিবারে অর্থনৈতিক সমস্যা চলছিল। বিস্তর ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি। এখান থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। মাঝে মধ্যেই টাকার জন্য বাবার কাছে হাত পাততে হতে সান্ত্বনাকে। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বাবা টাকা দিয়েও দিতেন। কিন্তু তাতেও সমস্যার সুরাহা হয়নি। সান্ত্বনার মৃত্যুতে তাই রহস্যও ঘনিয়েছে। প্রথমে শ্বশুরবাড়ির তরফে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলা হয়েছিল। পরে প্রতিবেশীদের থেকে জানা যায়, গতকাল সান্ত্বনার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির বাকি লোকেদের প্রচণ্ড গণ্ডগোল হয়। তারপর সব চুপচাপ হয়ে যায়। তাঁর মেয়ে এর জেরে গলায় ফাঁস দিয়েছে বলেই অভিযোগ মৃতের বাবার। তবে আত্মহত্যা নয়, এটা একেবারেই পরিকল্পিত খুন বলে অনুমান সান্ত্বনার পরিবারের।
[ পাঁচিল টপকে জেলে উড়ে আসছে মোবাইল! জলপাইগুড়িতে জালের ঘেরাটোপ ]
এরপর ঘটে আর এক কাণ্ড। শ্বশুরবাড়ি থেকে সান্ত্বনার মৃতদেহটি নামিয়ে সকালে হাসপাতাল মর্গে আনা হয়। অভিযোগ, পরে থানার ডোম মৃতদেহ থেকে কিছু সোনার গয়না গায়েব করে দেয়। এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে অশোকনগর হাসপাতালে। পরে চাপের মুখে ডোম রবি দাস স্বীকার করে নেয় সে গয়না খুলে নিয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। একে মেয়ের মৃত্যুশোক, তার উপর এরকম অমানবিক কাজ। চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এলাকাতেও। গৃহবধূর স্বামীকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত করার জন্য দেহটি বারাসাতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.