সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড় ইস্যুতে নাম না করে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিল্লির উসকানিতেই পাহাড়ে অশান্তি হয়েছে। তবে দিল্লি যতই উসকানি দিক না কেন, পাহাড় ও জঙ্গলমহলকে অশান্ত করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
[বিজেপির ‘চক্রান্তে’ অশান্ত পাহাড়, মোদির কুশপুতুল নিয়ে প্রতিবাদের পথে তৃণমূল]
রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠককে ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত পাহাড়ে। সেদিন মোর্চা সমর্থকদের তাণ্ডবে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল জিটিএ-র প্রশাসনিক দপ্তর ভানুভবন লাগোয়া এলাকা। এরপর গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালের বনধের ডাক দেন মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং। প্রায় দেড়মাসের বেশি সময়ে ধরা চলা বনধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। বনধ চলাকালীন পাহাড়ে একের পর এক সরকারি ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মোর্চার সমর্থকদের তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই পায়নি রয়ভিলার মতো ঐতিহাসিক ভবনও। আর পাহাড়ে এই নজিরবিহীন অশান্তিতে মোর্চাকে ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি, বারবারই এই অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ইউপিএ ধারায় মামলা রুজু হওয়া পর, দিল্লিতে মোর্চার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বৈঠক নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে বৈঠকের পর মোর্চার বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তড়িঘড়ি মোর্চার আলোচনাপন্থী নেতা বিনয় তামাংকে চেয়ারম্যান করে আলাদা বোর্ডও গঠন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
[পাহাড়ে বেধড়ক মার খেলেন দিলীপ ও তাঁর সঙ্গীরা, সদলবলে থানায় আশ্রয়]
কেন্দ্রের আশ্বাসে অবশ্য পাহাড়ে বনধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং। তবে গ্রেপ্তারি এড়াতে আত্মগোপন করে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, বিনয় তামাং-অনীত থাপার জুটির দাপটে পাহাড়ের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এরইমধ্যে দিন কয়েক আগে পাহাড় সফরে গিয়ে নিগৃহীত হন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের। প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর করা হয় তাঁদের। এই ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল বিজেপি ও তৃণমূল। এই প্রেক্ষাপটে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক জনসভা থেকে ফের একবার নাম না করে বিজেপি বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করলেন, দিল্লির উসকানিতেই অশান্ত হয়েছে পাহাড়ে।
[পাহাড়ের ৩ জায়গায় কাটা হল রাস্তা, নেপথ্যে কি গুরুংপন্থীরা?]
কিন্তু, আগে যাই হয়ে থাকুক না কেন, এখন তো পাহাড় শান্ত। ফের নতুন করে পর্যটকদের ভিড়ও বাড়ছে। তাহলে জঙ্গলমহলের জনসভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে পাহাড়কে কেন হাতিয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী? ওয়াকিবহাল মহলে মতে, রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর, যেভাবে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন মুকুল রায়, তাতে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রী। শোনা যাচ্ছে, দিল্লিতে গিয়ে অরুণ জেটলি, কৈলাস বিজযবর্গীয়র মতো বিজেপির প্রথমসারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন একদা তৃণমূলের ‘নম্বর টু’। সূত্রের খবর, দীপাবলীর পরে মুকুল রায়কে দলে নেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলতে পারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[রোগীর পেট থেকে বের হল কয়েক লক্ষ টিউমার, সফল অস্ত্রোপচার বাঁকুড়া মেডিক্যালে]