সৌরভ মাজি, বর্ধমান: খুশির ইদ। কিন্তু বর্ধমানের এক পরিবারের কাছে এবছরের ইদ খুশির হল না। কারণ ইদের ঠিক আগেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কেষ্টবাটি গ্রামে। ছেলের আবদার পূরণ করতে সামান্য দেরি করেছিলেন বাবা। আর তাতেই অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে এক কিশোর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আসগর আলি (১৬)। শুক্রবার সকালে বাড়িতে কীটনাশক খেয়েছিল সে। সকাল ১০টা নাগাদ তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
[ সল্টলেকের গেস্ট হাউসে রমরমিয়ে মধুচক্রের আসর, সিআইডির জালে মহিলা-সহ ৬ ]
ওই কিশোরের বাবা শেখ আলি নওয়াজ। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। আসগর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। কিছু কাজও সে করত না। নওয়াজ পেশায় গরু-মোষের পাইকারি কারবারি। তিনি জানান, সাধ্যমতো ইদের নতুন পোশাক কিনে দিয়েছিলেন ছেলেমেয়েদের। নতুন জামাকাপড় পেয়ে সকলেই খুব খুশি হয়েছিল। নওয়াজ জানান, এদিন সকালে তিনি ব্যবসার কাজে বাড়ি থেকে বেরোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় আসগর তাঁর কাছে এসে ৫০০ টাকা চায়। জানায়, ইদের কেনাকাটা তার জন্য যথেষ্ট নয়। ইদে আরও কিছু কেনাকাটা করতে চায় সে। ছেলের আবদার শুনে প্রথমে রাজি না হলেও পরে তা মেনে নেন নওয়াজ। তবে তিনি ছেলেকে জানান, তাঁর পক্ষে এখনই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। ব্যবসার কাজ সেরে বিকেলে বাড়ি ফিরে টাকা দেবেন। কিন্তু ছেলে তা মানতে নারাজ ছিল।
[ দিঘার হোটেলে মিলল গাড়িচালকের ঝুলন্ত দেহ, আটক হাওড়ার চিকিৎসক দম্পতি ]
এই নিয়ে অভিমান হয় আসগরের। কিছুক্ষণ পরেই ঘরে কীটনাশক খেয়ে নেয় সে। প্রথমে পরিবারের লোকজন বুঝতে পারেননি। পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাল চিকিৎসার জন্য সরসারি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা চিকিৎসা করার সুযোগই পাননি। মৃত ঘোষণা করেন তাঁরা।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান