Advertisement
Advertisement

Breaking News

Migrant laobourers

নেই রোজগেরে ছেলেরা, সরকারি সাহায্য পেয়েও বাঁচার চিন্তায় আকুল নিহত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার

কর্ণাটকে কাজে গিয়ে ম্যানহোলে আটকে মৃত্যু হয় দেগঙ্গার ৫ যুবকের।

Despite Getting Govt. Help, Families Worried About Death of Earning Members| Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 19, 2022 8:16 pm
  • Updated:April 20, 2022 8:38 am

অর্ণব দাস, বারাসত: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাংলার ৫ পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Labourers)। সোমবার দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবারই দেগঙ্গার শ্রমিকদের দেহ ফিরেছে বাড়িতে। পুরোটাই রাজ্য সরকারের তৎপরতা ও উদ্যোগে। দেহগুলিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সর্বহারা পরিবারগুলিতে আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু তাতে কি সারা জীবনের সুরাহা হবে? পরিবারের রোজগেরে ছেলেরাই যে আর নেই! কীভাবে সংসার চলবে এরপর? এই ভেবেই চিন্তায় আকুল দরিদ্র পরিবারগুলি। শোক ছাপিয়ে এই উদ্বেগই বড় হয়ে উঠছে তাঁদের কাছে।

একটু বাড়তি রোজগারের আশায় মাস আটেক আগে কর্নাটকের (Karnataka)ম‍্যাঙ্গালুরুতে কাজে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার কয়েকজন যুবক। নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফাজিলপুরের বাসিন্দা ওমর ফারুক ও সামিউল ইসলাম, আমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুরের বাসিন্দা নিজামুদ্দিন সাহাজি এবং দেগঙ্গা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দোগাছিয়ার বাসিন্দা সরাফাতা আলি ও মিরাজুল ইসলাম কাজে যান। সেখানে একটি বেসরকারি কোম্পানির মাছের প্যাকেজিংয়ের কাজ করতেন তাঁরা। রবিবার রাতে এই পাঁচ যুবকের পরিবারের কাছে তাঁদের মৃত্যুর খবর আসে। তাঁদের জানানো হয়, ম্যানহোল পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। সেখানেই বিষাক্ত গ‍্যাসে দমবন্ধ হয়ে প্রাণ হারান ওই পাঁচজন।

Advertisement
Bengal Youth
মৃত যুবক।

ঈদের (Eid)আগে প্রত্যেকেরই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ঈদের আগে তারা এলেন, কিন্তু কফিনবন্দি হয়ে। মঙ্গলবার দুপুরে দমদম বিমান বন্দরে ওমর ফারুক, নিজামুদ্দিন সাহাজি এবং মিরাজুল ইসলামের কফিনবন্দি দেহ আসে। বিমানবন্দর থেকেই এই তিনজনের দেহ নিয়ে দেগঙ্গায় পৌঁছন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, একেএম ফারহাদ। বিকেলে আরও একটি ফ্লাইটে পৌঁছয় মহম্মদ সামিউল ইসলাম এবং সারাফাত আলির দেহ। বিমানবন্দর থেকে তাঁদের দেহ নিয়ে দেগঙ্গায় পৌঁছন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং বারাসত সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়। মৃতদেহ গ্রামে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার, বন্ধু, প্রতিবেশীরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বর ‘কালো’, বিয়ের মণ্ডপে হবু স্ত্রীকে মালা পরাতেই সপাটে চড়! ভাইরাল ভিডিও]

মঙ্গলবার দুপুরে বারাসতে জেলা শাসকের দপ্তরে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা এবং বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে প্রতিটি পরিবারের হাতে চেক প্রদান করা হয়। এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন দেগঙ্গা এবং হাড়োয়ার বিধায়ক, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ-সহ জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা। প্রত্যেক পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এই পাঁচ পরিবারকে ‘বাংলা আবাস যোজনা’র ঘর দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Bengal Youth
মৃত যুবক।

তাঁর কথায়, “এই দিনটা আমাদের কাছে অত্যন্ত বেদনার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা মৃত পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলাম। আর্থিক সহায়তা ছাড়াও বাংলা আবাস যোজনার ঘর তাদের করে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পের সুবিধাও পাবেন মৃতদের পরিবার। স্থানীয় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিধায়ককেও পরিবার গুলোর পাশে সব সময় থাকার কথা বলা হয়েছে।” এদিন বারাসতের জেলা শাসকের দপ্তরে হাজির ছিলেন মৃত পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা। তাদের হাতে চেক তুলে দেওয়ার সময় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি কেউ। তাদের অসহায়তা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সকলে। এদিন চেক পাওয়ার পর মৃত মিরাজুল ইসলামের মা মনোয়ারা বিবি বলেন, “ছেলে এখানে ইটভাটায় কাজ করত। কিন্তু সারা বছর কাজ থাকত না। আমাদের খুব অভাবের সংসার। তাই রোজগারের জন্য ভিন রাজ্যে গিয়ে ছেলের মৃত্যু হল।”

[আরও পড়ুন: ‘অর্থনীতি থেকে জাতীয় নিরাপত্তা, সবেতেই ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী’, মোদিকে ফের আক্রমণ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ