Advertisement
Advertisement

Breaking News

বেগার খেটেই কালীপুজোয় ‘রাজঋণ’ শোধ করে মেটে সম্প্রদায়

আউশগ্রামের পুজো এখন সর্বজনীন।

Devotees throng centuries old ‘Kali Puja’ in Burdwan ‘Rajbari’ every year
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 12, 2017 6:45 am
  • Updated:September 27, 2019 1:04 pm

ধীমান রায়, আউশগ্রাম: রাজ পরিবার শুরু করেছিল কালিকার আরাধনা। বর্ধমান রাজার হাত ধরেই এই জনপদে বসবাসের সুযোগ পান মেটে শ্রেণির প্রতিনিধিরা। সেই কৃতজ্ঞতা এবং রাজ পরিবারের প্রতি সম্মান জানাতে এখনও কালীপুজোয় বেগার খাটেন মেটে পরিবারের প্রতিনিধিরা। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে বর্ধমানের উল্লাসপুরের কালীপুজোয়। সাড়ে চোদ্দ হাতের কালী দর্শনার্থীদের আজও নানা কৌতুহল মেটায়।

[কঙ্কালসার চেহারায় কালিকার আরাধনা বর্ধমানে]

Advertisement

বর্ধমান জেলার জঙ্গলমহল এলাকা বলে পরিচিত আউশগ্রাম। এই এলাকার রামনগর অঞ্চলের ছোট্ট একটি গ্রাম উল্লাসপুর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বর্তমান উল্লাসপুরের পাশে খটনগর গ্রামে তখন রায় পরিবারের জমিদারি ছিল। রায় পরিবারের জমিদারি ছিল বর্ধমান রাজার অধীনে। রায় পরিবার দুর্গাপুজো করার জন্য ইলামবাজার এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন ব্রাহ্মণকে সপরিবারে নিয়ে এসেছিলেন ওই এলাকায়। খটনগরের পাশে উলোডাঙা নামে ফাঁকা একটি জায়গায় ওই ব্রাহ্মণদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই থেকে ওই উলোডাঙার নামকরণ হয় উল্লাসপুর গ্রাম। উল্লাসপুরে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার তখন থেকেই বসবাস শুরু করে। তারাই রায় পরিবারের পুরোহিত।

Advertisement

[তারাপীঠ মহাশ্মশানের পবিত্রতা নষ্টের অভিযোগ সাধুদের, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি]

বন্দ্যোপাধ্যায়রাই বর্ধমান রাজার নির্দেশে প্রায় ৩০০ বছর ধরে এই কালীপুজো করে আসছেন। তবে এর পিছনে রয়েছে আরও এক কাহিনি। স্থানীয়রা বলেন, বর্ধমান রাজা কীর্তিচন্দের সময়ে শুরু হয়েছিল উল্লাসপুরের কালীপুজো। তখন আউশগ্রামে প্রায়ই আসতেন বর্ধমান রাজপরিবারের সদস্যরা। মূলত বনবিহারের উদ্দেশ্যে রাজারা কয়েকদিন করে কাটিয়ে যেতেন আউশগ্রামে। জানা যায় রায় পরিবারের দুর্গাপুজোয় আমন্ত্রিত ছিলেন বর্ধমানের রাজা কীর্তিচন্দ। সেই সময় পুজোয় টানা চন্ডীপাঠ হত। পুরোহিত বন্দ্যোপাধ্যায়দের চণ্ডীপাঠ শুনে মুগ্ধ হয়ে যান কীর্তিচন্দ। তিনি তখন বন্দ্যোপাদ্যায়দের পাঠক উপাধি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি কালীভক্ত কীর্তিচন্দ তাদের কালীপুজো করার প্রস্তাব দেন। পুজোর করার জন্য প্রচুর জমি দান করেন বর্ধমান রাজা। উল্লাসপুরে সেই সময় থাকত মেটে পরিবার। অন্ত্যজ শ্রেণি মেটেদেরও ভিন জায়গা থেকে ওই গ্রামে এনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কালীপুজোয় মূর্তি গড়া, মন্দির পরিষ্কার-সহ বেশ কিছু কাজ মেটে পরিবার করত। রাজার আমল থেকেই তারা বিনা পারিশ্রমিকে এই সমস্ত কাজ করে আসছে। তবে মেটেরা এখন মূলত ভক্তির কারণেই এই দায়িত্ব পালন করেন। ভক্তি এবং ইতিহাসের টানে আউশগ্রামের উল্লাসপুরের কালীপুজোয় দূর-দুরান্ত থেকে পুন্যার্থীরা আসেন। প্রচুর ধুমধাম হয়। গভীর রাতে পুজো হয়। এক সময় রাজার হাত দিয়ে শুরু হওয়া এই পুজো এখন আক্ষরিক অর্থেই সর্বজনের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ