সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সাপে কাটা এক রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ঘটনার বিষয়ে শনিবার ই-মেলে স্বাস্থ্যদপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই রোগীর আত্মীয় তথা বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
যদিও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর সঙ্গে একজন আত্মীয়কে চিকিৎসকের কাজ পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই রোগীকে নিয়ে বেশ কয়েকজন জরুরি বিভাগে ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। চিকিৎসক একজনকে রোগীর সঙ্গে থাকতে বলে বাকিদের বাইরে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তা শোনেননি রোগীর আত্মীয়রা। এই নিয়ে বচসা বাঁধে।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত বুধবার রাতে। বাঁকুড়ার ইন্দাসের বক্তারপুরের বাসিন্দা সুদীপ যশকে সাপে কামড়ায়। রাতেই তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। তিনদিন ভরতি থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়িও চলে গিয়েছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার পর তার আত্মীয় মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র এদিন স্বাস্থ্যদপ্তরে সেদিনের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগে জানিয়েছেন, গত বুধবার সাপে কাটা রোগীকে জরুরি বিভাগে ভরতির সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন মৃত্যুঞ্জয়। তাতে সেদিন চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁদের বচসার দৃশ্য ধরা পড়েছে। চিকিৎসককে বলতে শোনা গিয়েছে, একজন রোগীর সঙ্গে থাকুন, বাকিরা বাইরে যান। কিন্তু তা না করায় তিনি চিকিৎসা শুরু করতে অস্বীকার করেছেন। সেই ভিডিও ‘বিজেপিপন্থী’ কয়েকজন চিকিৎসক সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও করেছেন।
সুদীপের মা শুক্লা যশ বলেন, “জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও তার সহযোগী বারেবারেই আমার ছেলের কোন চিকিৎসা না করে আমাদের সেখান থেকে বের করে দেওয়ার জন্য বেশি ব্যস্ত ছিলেন। ওঁকে জোর হাত করে বলেও কোন কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েছি আমরা বেরিয়ে আসতে।”
আত্মীয় মৃত্যুঞ্জয় যশ বলেন, “ওই চিকিৎসক রীতিমতো তাঁর নাম বলে হুমকি দিচ্ছেন, যা পারবেন করে নেবেন বলে। উনি হাসপাতাল থেকে লোক তাড়াতেই ব্যস্ত ছিলেন চিকিৎসা করার থেকে।” বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “কোনও পরিস্থিতিতেই রোগীর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যাতে কেউ খারাপ ব্যবহার না করে সেটা আমরা সব সময়েই বলে থাকি। আমি বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ এখনও হাতে পায়নি। আমরা ওই চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলব। তবে ছেলেটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে, এটাই আমাদের কাছে আনন্দের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.