শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: গাড়ির সিটের মধ্যে লুকিয়ে সোনার বিস্কুট পাচারের ছক ভেস্তে দিল কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডিআরআই)। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। আর প্রায় চার কোটি টাকার সোনা-সহ মিজোরামের তিন যুবককে হাতেনাতে পাকড়াও করেন গোয়েন্দা শাখার কর্মীরা। উদ্ধার হয়েছে প্রায় দশ কেজি সোনা।
[আরও পড়ুন: পুলিশ সেজে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি! লুট নগদ টাকা ও গয়না]
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল মিজোরামের আইজল জেলার জুয়াংটুইয়ের বাসিন্দা জমুয়ানকিমা, আইজল মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের মান্তা বাজারের বাসিন্দা এইচ রুয়ালসাঙ্গপুইয়া ও উত্তর তুইকুয়ালের বাসিন্দা লালনেইহলাইয়া। রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয় শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের গোয়ালটুলি মোড়ে। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই তিন যুবককে।
সোমবার সকালে ধৃতদের শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। সবকিছু শুনে বিচারক তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পাচারের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছেন ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে সিকিম ও এরাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৪৮টি অভিযান চালিয়ে ১৫১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার সোনা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর পরিমাণ মোট ৪৮৭ কেজি। আর গ্রেপ্তার হয়েছে ১৩৯ জন।
এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী ত্রিদিব সাহা বলেন, ‘ধৃতরা ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে সোনা ভারতে নিয়ে আসে। সড়কপথেই সোনা কলকাতায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। তখনই ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। চারচাকা গাড়ির সিটের মধ্যে সোনার বিস্কুটগুলি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কলকাতায় ওই বিস্কুটগুলি হস্তান্তরের কথা ছিল। সেখান থেকে ফের তিনটি দলে ভাগ হয়ে দিল্লি ও মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল।
[আরও পড়ুন: যন্ত্রণাহীন মৃত্যু ‘উপহার’ দিচ্ছে কালাচ, বর্ষার শুরুতেই ছড়াচ্ছে সর্পাতঙ্ক]
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মিজোরামের আইজলের কাছে ইন্দো-মায়ানমারের জোখাওথার সীমান্ত পার করে সোনার বিস্কুটগুলি ভারতে ঢোকে। কোচবিহার পার করতেই গোয়েন্দাদের কাছে পাচারকারীদের বিষয়ে গোপন সূত্রে খবর আসে। জলপাইগুড়ির কাছ থেকে পাচারকারীদের গাড়ির পিছু নেন গোয়েন্দারা। আর গোয়ালটুলি মোড় পৌঁছতেই গাড়ি সমেত ওই তিনজনকে আটক করা হয়। এরপর গাড়িতে তল্লাশি চালালে পিছনের সিটের মধ্যে থেকে ৬০ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়। প্রতিটি সোনার বিস্কুটের ওজন ১৬৬ গ্রাম। মোট ৯ কেজি ৯৬০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। বিস্কুটগুলি মূলত মায়ানমারেই তৈরি। বিস্কুটগুলির উপর ইংরেজিতে স্টার ৮৮৮৮ ওয়াইজিএন লেখা খোদাই করা রয়েছে।