BREAKING NEWS

১২ আশ্বিন  ১৪৩০  শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

Durga Puja 2021: করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে পুরোদমে শুরু পুজোর প্রস্তুতি, সেজে উঠছে ৪০০ বছরের পুরনো নন্দকুমারের বনেদিবাড়ি

Published by: Tiyasha Sarkar |    Posted: September 28, 2021 5:42 pm|    Updated: September 28, 2021 6:13 pm

Durga Puja 2021: Preparations for the 400-year-old Puja begin in full swing | Sangbad Pratidin

সৈকত মাইতি, তমলুক: করোনার (Corona Virus) কারণে গত বছর নমো নমো করে হয়েছিল পুজো। তবে এবার পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। সেই কারণে ফের ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন শুরু হয়েছে নন্দকুমারের ঐতিহ্যবাহী বনেদি বাড়িতে। পুজোর গন্ধে ম ম করছে মণ্ডপ-চত্বর।  

তমলুকের (Tamluk) নন্দকুমার ব্লকের অন্তর্গত ব্যবত্তারহাট এলাকা। এলাকার ভট্টাচার্য এবং চক্রবর্তী পরিবারের মিলিত প্রয়াসে প্রায় ৪০০ বছর ধরে নিষ্ঠা মেনে দেবীদুর্গার আরাধনার আয়োজন করা হয়ে থাকে। যা এখন এলাকার মানুষের কাছে প্রাণের স্পন্দন হয়ে উঠেছে। ব্যবত্তারহাট-সহ আশপাশের বহু গ্রাম থেকে ভক্তরা এই পরিবারের পুজো দেখতে আসেন। কিন্তু গত বছরে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে সমস্ত কিছুই এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। বনেদি শতাব্দীপ্রাচীন দুর্গাপূজার আয়োজনেও ধাক্কা লেগেছিল। গতবছর কোনওরকমে নমো নমো করে হয়েছিল পুজো। কিন্তু এবছর খানিকটা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেই কারণেই অতীতের ঐতিহ্য বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারও ঘটা করে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ব্যবত্তারহাটে।

Puja

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: ফেলে দেওয়া ওষুধের স্ট্রিপ দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ, তাক লাগালেন বাংলার বধূ]

জানা গিয়েছে, সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী তাম্রলিপ্ত নগরীর তাম্রধ্বজ রাজার ব্যবস্থাপক ছিলেন এই ভট্টাচার্য ও চক্রবর্তী পরিবারের পূর্বপুরুষরা। সেই কারণেই এলাকার নামকরণ হয় ব্যবত্তারহাট। এই ব্যবত্তা বাটির পূর্বপুরুষ ছিলেন সার্থক রাম। সেইসময় সার্থকরামের মাতা দুর্গাপুজোর অঞ্জলি দিতে গিয়েছিলেন পাশের একটি গ্রামে। কিন্তু ভিখিরি বামুনের বউ বলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল মাকে। তাই মায়ের এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতেই ঘট তুলে দুর্গা পুজোর প্রচলন করেছিলেন সার্থক রাম। কালক্রমে তা এই দুই পরিবারের পারিবারিক পুজো হয়ে গিয়েছে। প্রাচীন প্রথা মেনে আজও নিরামিষ অন্নভোগ দেওয়া হয় দেবীকে। রঙিন আলোকমালায় সেজে ওঠে গোটা এলাকা।

দেবীকে নিজের হাতে তৈরি বড়ি দিয়ে ভোগ নিবেদন করেন এই বাড়ির মহিলারাই। ষষ্ঠীতে মাকে এক মন ছয় সের চালের ভোগ দেওয়া হয়। একইভাবে সপ্তমীতেও ভোগ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে থাকে নানান পদ। এভাবে অষ্টমী এবং নবমীতে এক মন ৮ সের চাল ও এক মন ৯ সের চালের ভোগ দেওয়া হয়। বিশেষ রীতি মেনে হয় সন্ধিপুজো। সেখানেও খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয়। দশমীতে দধিকর্মা দিয়ে বিদায় জানানো হয়। সিঁদুর খেলার পর বাড়ির পুরুষরা কাঁধে করে বাড়ির অনতিদূরে দেবীকে পুকুরে ভাসান সম্পন্ন করেন। প্রায় হাজার খানেক প্রদীপের সলতে পাকান বাড়ির বৌ-মেয়েরা।

এই পুজোর দায়িত্বপ্রাপ্ত অরূপ ভট্টাচার্য বলেন, “আগের সেই পুরনো জমিদার আমলের দুর্গামণ্ডপ ভেঙে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর জায়গায় তৈরি হয়েছে নতুন মণ্ডপ। পুজোর ক’দিন পরিবারের সবাই দূরদূরান্ত থেকে এসে উপস্থিত হন। আশপাশের কয়েক হাজার মানুষের জন্য ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। গত বছর থেকে করোনার কারণে সেই ভোগ খাওয়ানো বন্ধ। হচ্ছে না পুষ্পাঞ্জলিও। শুধুমাত্র করজোড়ে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পারিবারিক এই পুজোর আরেক সদস্য সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ”প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতি মেনে এবারের দুর্গাপুজার আয়োজন করা হলেও ভক্ত সমাগমের ক্ষেত্রে অনেকটাই বিধি-নিষেধের মধ্য দিয়েই আমাদের এই পুজোর আয়োজন করতে হয়েছে। তবে সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও এবছর এই পুজোয় জমজমাট থাকবে গোটা এলাকা।

[আরও পড়ুন: রায়গঞ্জ গুলিকাণ্ডের নেপথ্যে ব্যক্তিগত রোষ? পুলিশকর্মীর বাড়িতে হামলায় অভিযুক্ত ২ বিএসএফ জওয়ান]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে