ধীমান রায়, কাটোয়া: অসময়ের ফল আম এখন মহার্ঘ। প্রতি কেজি ৪০০ ছুঁই-ছুঁই। শাকালু ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। দুর্গাপুজোয় ফলের বাজারে কার্যত আগুন৷ সবজির দামে তবু অনেকটা সমতা রয়েছে। কিন্তু ফলের দাম নিয়ে চিন্তিত পুজো উদ্যোক্তারা। দুর্গাপুজোর আঁচ এক সপ্তাহ আগে থেকেই পড়তে শুরু করেছে ফলের বাজারে।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের সুবাদে যেকোনও পুজোর আগেই ফলের দাম কিছুটা ঊর্ধমুখী হয়। তবে, এবছর দুর্গাপুজোর আগে ফলের দাম দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। পারিবারিক পুজোগুলির ক্ষেত্রেও পরিবারের কর্তাদের কার্যত মাথায় হাত। কারণ এবছর প্রায় সমস্ত ফলের দামও অস্বাভাবিক বেশি। এমনই দাবি স্থানীয়দের।
কাটোয়া, ভাতার, আউশগ্রাম, গুসকরা প্রভৃতি বাজারে ফলের দোকানগুলিতে খোঁজখবর দেখা যাচ্ছে ফলের দাম এখন থেকেই লাগামের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ ভাতার কৃষিবাজার, ভাতার বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাজার মিলে রয়েছে বেশ কয়েকটি ফলের দোকান। ভাতার ব্লক এলাকার বহু গ্রাম থেকেই এখানে পুজোর ফল কেনাকাটা করতে আসেন গ্রামবাসীরা। জানা গিয়েছে মূলত পঞ্চমীর দিন থেকেই পুজো উদ্যোক্তারা ফলের বাজার সেরে ফেলেন। ভাতার বাজারের ফল বিক্রেতারা বর্ধমানে পাইকারি বাজার থেকে ফল কিনে এনে বিক্রি করেন। তাঁদের গাড়ি ভাড়া করে মালপত্র কিনে আনতে হয়। স্থানীয় ফল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পুজো উপলক্ষে তারা পাইকারি বাজারে কথা বলেছেন। সেই অনুমান করে আমের বিক্রয়মূল্য ৩৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত ছুঁয়ে যাবে। শাখালু প্রায় প্রতিটি পুজোতেই ব্যবহার হয়৷ সেই শাখালুর দাম ১৭৫-২০০ টাকা কেজি বলে জানিয়েছেন ফল বিক্রেতারা। এছাড়া বারো মাস শসা যেখানে ৩০-৪০ টাকা প্রতি কেজি দাম পড়ে, এখন দাম উঠেছে ৫০-৬০ টাকা৷ আপেলের দাম পড়ছে ১৪০-১৬০ টাকা কেজি। পুজোতে নাসপাতির দামও ১৫০ এর নিচে হবে না বলে জানিয়েছেন ফল বিক্রেতারা।
[প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী ইসলামপুর কাণ্ডে নিহতদের পরিবার]
কাটোয়ার ফল ব্যবসায়ী অজয় দাস জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর জন্য পঞ্চমীর দিন তারা দোকানে ফল তুলবেন। তার আগে বুকিং করে এসেছেন তারা। অজয়বাবু বলেন, ‘‘আমের পাশাপাশি কলার দামও এবছর প্রচণ্ড বেশি। মনে হচ্ছে পুজোর কলা আমরা ৮০ টাকা ডজনের নিচে দিতে পারব না। ভাল কলা ১০০ টাকা প্রতি ডজন দাম পড়ে যাবে। ফল বিক্রেতারা জানিয়েছেন ফলন কম বলে এবছর নারকেলের দামও এবছর অনেকটা বেশি। কলার দাম বেশি হওয়ার জেরে ফল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গ্রামেগঞ্জে সিঙাপুরি কলার চাষ অনেক বেশি হচ্ছে। সে তুলনায় চাঁপাকলার উৎপাদন কমে গিয়েছে। কিন্তু সিঙাপুরি কলা পুজোয় লাগে না। তাই পুজোর কলার দাম এখন এতটা বেশি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে সবজির দাম সেতুলনায় নাগালের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু বিশেষ করে অসময়ের ফলের দাম নাগালের বাইরে। দুর্গাপুজো চারদিনের পুজো। দেবীর নৈবেদ্যের থালা কীভাবে ভরতি করা হবে তা নিয়ে চিন্তিত পুজো উদ্যোক্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.