Advertisement
Advertisement
Elephants

ঘন কুয়াশায় গা ঢাকা, মহানন্দে খেতের আলু সাবাড় করছে হাতির দল

উত্তরবঙ্গে গজরাজের দাপটে মাথায় হাত চাষিদের।

Elephants damage crops in North Bengal as they are not seen during heavy fog | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 12, 2023 9:46 pm
  • Updated:December 12, 2023 9:46 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পা দিয়ে খেতের মাটি খুঁড়ছে, শুঁড়ে তুলে সেই মাটি ঝেরে টাটকা কাচা আলু (Potato) টপাটপ মুখে পুরে ডিনার সেরে নিচ্ছে ওরা! রাতভর মহাভোজের এই আসর দু’ফুট দূর থেকেও নজরে পড়ছে না। মহানন্দে তাই ভোরের আগেই জঙ্গলে ফিরছে গজরাজের (Elephants) দল। ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কমতে এমনই বিপদ দেখা দিয়েছে উত্তরের শিলিগুড়ি মহকুমা এবং জলপাইগুড়ির জলঢাকা নদী চর এলাকার আলু চাষিদের। শুধু একদিনেই জলঢাকার চরে আট বিঘা এলাকার আলু লোপাট করে চম্পট দিয়েছে দাঁতালের দল।

কুয়াশার দাপট যত বাড়ছে ততই যেন আহ্লাদে আটখানা বুনোরা। বিকেলের পর ছানাপোনা নিয়ে সপরিবারে জঙ্গল ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে আলুখেতের আশপাশে। কুয়াশায় (Fog) চারপাশ ঢেকে যেতে শুরু হচ্ছে অভিযান। গ্রামবাসীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চারদিনে শুধুমাত্র জলঢাকা নদী চর এলাকায় কুড়ি বিঘা আলুখেত ফাকা করেছে বুনো হাতির দল। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার সেখানে প্রায় দুশো বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সেগুলো তুলে বাজারে পাঠানোর কথা। যদিও চাষিদের প্রশ্ন সেটা সম্ভব হবে কেমন করে?

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আমরাই INDIA-কে নেতৃত্ব দেব’, শিলিগুড়িতে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা মমতার]

স্থানীয় আলু চাষি মদন রায় বলেন, “শনিবার রাতে এক চাষির ছয় বিঘা এবং রবিবার রাতে অন্যজনের চারবিঘা জমির আলু তুলে খেয়েছে হাতি।” তিনি জানান, কুয়াশা দেখা দিতে ওরা দলবল নিয়ে হাজির হচ্ছে। আলু চাষি অনন্ত রায় এবার সেখানে ১৫ বিঘা, মদন রায় ১২ বিঘা, দীপেন রায় ১৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। কতটা আলু ঘরে উঠবে কেউ বলতে পারছেন না। রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিকেলের পর থেকে তারা খেত পাহারা দিচ্ছেন। অনন্ত বলেন, “দু’ফুট দূরের জিনিস ঠিক মতো দেখা যায় না। শব্দ পেলে আন্দাজে পটকা ফাটাতে হচ্ছে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। এদিক থেকে সরে অন্যদিকে চলে যাচ্ছে।”

Advertisement

আলু চাষি চন্দু দেবনাথ জানান, ইতিমধ্যে তার ১১ বিঘা খেতের আলু নষ্ট হয়েছে। তাঁর কথায়, “বৃহস্পতিবার হালকা কুয়াশা ছিল। বিকেলের পর হাতির দলকে পা দিয়ে মাটি সরিয়ে বড় মাপের আলু বেছে শুড়ে তুলে মাটি ঝেরে খেতে দেখে অবাক হয়েছি। এখন মশাল দেখেও ভয় পায় না।”

[আরও পড়ুন: ‘নতুন নতুন ইতিহাস লেখেন শাহ’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘নেহরু খোঁচা’র পালটা রাহুলের]

একই পরিস্থিতি হয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, খড়িবাড়ি, ফাসিদেওয়া ব্লকের বাগডোগরা, বুড়াগঞ্জ, হাতিঘিসা, মণিরাম, কেটুগাবুরজোত, মতিধর এলাকায়। এখানেও ধান পাকতে হামলা বেড়েছে। এখন খেতে ধান নেই। তাই সবজির দিকে নজর বুনোদের। নকশালবাড়ি থানার কেটুগাবুর জোত এলাকার বাসিন্দা উমাশঙ্কর দাস জানান, টুকুরিয়াঝাড় ও বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে হাতি আসছে। কয়েকদিন থেকে একটি দলছুট হাতির উপদ্রব বেড়েছে। পটকা ফাটিয়ে, কানেস্তারা বাজিয়ে হাতি তাড়িয়ে সবজি রক্ষা করতে হচ্ছে। সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ। তিনি বলেন, “জঙ্গল লাগোয়া প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে সতর্ক করা হয়েছে। হাতি তাড়াতে অন্তত সার্চ লাইট, পটকা দেওয়া হয়েছে।” 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ