শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ধনীবাড়ির মেয়ের সঙ্গে বিয়ের ইচ্ছে। এর জন্য নিজেকে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে বড়াই করেছিল যুবক। পরিকল্পনামাফিক একটি স্কুলে গিয়ে ভুয়ো কাগজপত্র দেখানো হয়েছিল। স্কুলে বলা হয়েছিল কেউ খোঁজ নিলে যেন আসল কথা বলা না হয়। কিন্তু অঙ্ক মিলল না। ধরা পড়ে গেল জাল শিক্ষক। আপাতত তার ঠাঁই শ্রীঘরে৷ ঘাটালের কিসমৎ কোতলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ধৃত যুবকের নাম অজিত পাঁজা।
[জীবনে যখন মায়ের কথা সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে আপনার]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তকে সম্প্রতি ঘাটালে দেখা যায়। দিন কয়েক আগে স্থানীয় কিসমৎ কোতলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে নিজেকে নবনিযুক্ত শিক্ষক বলে দাবি করে অজিত। কিন্তু কোনও নিয়োগপত্র দেখাতে পারেনি। শনিবার নিয়োগপত্র নিয়ে হাজির হবেন বলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে জানিয়ে চলে যায় সে। যুবকের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক বিমল পালের। তিনি নিয়োগপত্র নিয়েই শনিবার স্কুলে আসতে বলেন। এর মাঝে হঠাৎ বিমলবাবুকে ফোন করে যুবকটি বলে, “আমার নাম জানিয়ে কেউ ফোন করলে যেন ওই স্কুলের শিক্ষক বলে পরিচয় দেওয়া হয়।” এরপর বিমলবাবুর সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। তিনি স্কুলের সভাপতি, বিডিও, জেলাশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ও শিক্ষক নেতাদের আগাম বিষয়টি জানিয়ে রাখেন। শনিবার স্কুলে যুবকটি এলে তাঁর নিয়োগপত্র দেখতে চান স্কুলের-সহ শিক্ষক বিধান পোড়্যা। কিন্তু যুবকটি নিয়োগপত্র দেখাতে পারেনি। তারপরই তাকে একটি ঘরে আটক করে রাখা হয়। একটু পরেই স্কুলে হাজির হন চন্দ্রকোণার লক্ষ্মীপুরের অরুণ নায়েক ও অর্পিতা নায়েক নামে এক দম্পতি। তাঁরা আসতেই আসল ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যায়।
[দামি গাড়ি নয়, লোকাল ট্রেনে বাড়ি ফিরে নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন শার্দুল]
অরুণবাবুর ভাগনি শর্মিষ্ঠা মণ্ডলের সঙ্গে যুবকটির বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছিল। আগামী সোমবার তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। যুবকটি ঘাটালের কিসমৎ কোতলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল বলে জানান অরুণবাবু৷ তাঁর কথায়, “শর্মিষ্ঠা ছোট থেকে আমার বাড়িতে মানুষ। ওর জন্য যে পাত্র দেখেছি সে প্রকৃত শিক্ষক কিনা যাচাই করতেই স্কুলে এসেছিলাম। এখানে এসে আসল কথা জানতে পারি। ছেলেটি ভুয়ো শিক্ষক পরিচয় দিয়ে আমার ভাগনিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছি।”
[মাস দুয়েকের মধ্যে এক লাফে অনেকটা বাড়তে পারে নতুন আলুর দাম]
অরুণবাবুরা শনিবার ঘাটাল থানায় অজিত পাঁজার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। মালাবদলের বদলে হাতকড়া জুটেছে তারা। ঘাটাল থানায় বসে যুবকটি দোষের কথা কবুল করে। সে জানায়, “আমি স্কুলটি দেখতে গিয়েছিলাম৷ শিক্ষক হিসাবে যাইনি। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।” অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আনন্দপুর থানার পিয়াশালা গ্রামে।
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
[লালগড়ে এবার ঢুকল হাতি, বাঘের আতঙ্ক ছড়াল শালবনিতেও]