চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: বোতল ভরতি ওয়াইনের ঝকঝকে শোকেসের ছবি। তার উপর লেখা ‘আসানসোল ওয়াই শপ’। হোম ডেলভারির জন্য দেওয়া রয়েছে মোবাইল নম্বরও। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর ফেসবুকে তৈরি হয়েছে একটি নতুন পেজ। তাতে যেমন পড়ছে লাইক, তেমনই ফোন করছেন ক্রেতারা। লকডাউনের বাজারে এমনিতেই বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন মদ্যপায়ীরা। পেজটির কথা জানাজানি হতেই হামলে পড়ছেন তাঁরা। প্রিন্ট রেট থেকে ১০০ টাকা বেশি দিলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে মদ। তবে আগাম টাকা দিতে হবে অনলাইনে। অনলাইনে টাকা দেওর পর বাড়িতে যদি ডেলিভারি যদি না পৌঁছায়? সন্দেহজনক প্রশ্ন শুনেই ডেলিভারি সংস্থার জবাব, “ইচ্ছে থাকলে নেবেন, নয়তো আঙুল চুষুন।” এভাবেই অনলাইনে মদ বিক্রি ও হোম ডেলিভারির প্রতারণা চক্র গড়ে উঠেছে আসানসোলে।
নাম না জানানোর শর্তে আসানসোলের এক ব্যক্তি বলেন, “ওয়াইন শপ নামে খোলা পেজে যে নম্বর দেওয়া হয়েছে তাতে ফোন করা হলে একটি দশ ডিজিটের পেটিএম বা ফোনপে’র নম্বর দিয়ে অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে বলা হচ্ছে। যে ব্র্যান্ড নেওয়া হবে তার বাজারমূল্য থেকে একশো টাকা করে বেশি দিলেই পৌঁছে যাবে পছন্দের ব্র্যান্ড। টাকা জমা পড়ার ৪৫ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি বয় বাড়ির কাছে গিয়ে ফোন করে ডেকে নেবে। তারপর দেওয়া হবে বোতল।” তিনি বলেন, “জানতে চাই, কী করে ভরসা করব?” জবাব আসে, “গত কয়েকদিন ধরে আমরা এই ব্যবসাই করছি। নেওয়ার হয় নেবেন নয় নেবেন না। ভাট বকার সময় নেই।” জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি ৬৬০ টাকা দিয়ে বিশেষ ব্র্যান্ডের হুইস্কি ওর্ডার দিলেও তাঁর কাছে ডেলিভারি বয় আসেনি।
উল্লেখ্য, ভুয়ো প্রচারকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে আসানসোলে। আবগারি আইনে এভাবে হোম ডেলিভারির কোনও নিয়ম নেই। সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। মদ বিক্রির জন্য ই-ওয়ালেটের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাতেই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকছে। জেলা আবগারি সুপারেটেন্ডেন তুহিন নাগকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্পষ্ট বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।” শহরবাসীর দাবি তদন্ত হোক এই চক্রের বিরুদ্ধে। মদ বিক্রির নামে শুরু প্রতারণা করাই উদ্দেশ্য? নাকি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে জামতড়া গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠেছে? তাও সামনে আসা দরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.