পুড়ে যাওয়া ধান। নিজস্ব চিত্র
অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তার মধ্যেই জমিতে ধান রক্ষার চেষ্টা করছেন চাষিরা। নিজেদের জীবন বাজি ধরে ৩০ বিঘা জমির ধান রক্ষা করলেন চাষিরা। ঘটনাটি বাঁকুড়ার। কোতুলপুর ব্লকের সিহাস ও বনমুখার মাঝামাঝি এলাকায় খাস ধানের জমিতে এই আগুন লাগে বৃহস্পতিবার। তবে প্রায় ছয় বিঘা জমির ধান রক্ষা করা যায়নি। জমির নাড়া পোড়াতে গিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা। ধান পুড়ে যাওয়ায় বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে কৃষকরা।
বারবার কৃষি দপ্তরের থেকে জমিতে খড় না পোড়ানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে। জমির খড় পোড়ানোকে নাড়া পোড়ানো বলে। পরিবেশের ক্ষতির কারণে কোনওভাবেই নাড়া পোড়ানো যাবে না। সেই কথা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তার পরও এই নাড়া পোড়ানোর ঘটনা ঘড়ে। আর তাঁর থেকেই এই বড় বিপত্তি। রঘুনাথ পাল নামে এক চাষি মেশিনের সাহায্যে ধান কাটেন। সেই খড় জমিতেই পড়েছিল। ওই জমিতে এরপর আলু চাষ হবে। সেজন্য উত্তর দিকের জমির নাড়াতে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জমিতে। আগুনের শিখায় প্রায় ৫ থেকে ৬ বিঘার বেশি পাকা ধান সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। শুক্রবারও সেই পোড়া জমির ধানের সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করছেন চাষিরা। কীভাবে এত বড় আর্থিক ক্ষতি সামাল দেওয়া যাবে? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
উত্তম চক্রবর্তী, সোহম ঘোষরা চাষের কাজ করেন। তাঁরা জানান, আগুন নিমেষে ধানের জমিতে ছড়িয়ে গিয়েছিল। সেই আগুন নেভানো সহজে সম্ভব ছিল না। সেই সময় মাঠে চার থেকে পাঁচ জন কাজ করছিলেন। সকলেই আগুন নেভানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ঠান্ডা হাওয়ায় আগুনের শিখা দাউ দাউ করে আরও জ্বলে ওঠে। আগুনের শিখায় ঝলসে যেতে পারতেন মাঠে থাকা ব্যক্তিরা। এক সময় বিপদ বুঝে তাঁরা ধানের জমি থেকে ওই আগুন লাগার অংশ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেন। মাঠে পড়ে থাকা ধানের অংশ সরাতে থাকেন তাঁরা। ফলে আগুন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। কম করে ৩০ বিঘা জমির ধান এভাবে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। সেই কথা তাঁরা জানান। প্রশাসনের তরফ থেকে ওই ঘটনার পর সেখানে আধিকারিকরা যান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.