রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: পুজোর আগে বোনাস হাতে পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছিল কালচিনি থানার আটিয়াবাড়ির চা বাগানের শ্রমিকদের। কটাদিন বিরতিতে পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিলেন তাঁরাও। কিন্তু মহাষ্টমীতে ঘটল বিপত্তি। আচমকাই আনন্দে রাশ টানতে হল তাঁদের। চা বাগানের ভিতরের কারখানার সাইরেন শ্রমিকদের জীবনে বয়ে আনল অন্ধকারের বার্তা। আগুনে পুড়ে ছাই ২২০০ শ্রমিকের গুরুত্বপূর্ণ নথি।
[ঘূর্ণাবর্তের ভ্রুকুটি, সপ্তমী থেকেই শুরু বৃষ্টি ]
১১৭ বছরেরও বেশি পুরনো কালচিনি থানার আটিয়াবাড়ি চা বাগান বর্তমানে অনেকটাই সমৃদ্ধ। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলও পেয়েছেন শ্রমিকরা। পুজোর আগেই ১৯.৭৫% হারে প্রায় দেড় কোটি টাকা বোনাসও হয়ে গিয়েছিল। এমনকী সাপ্তাহিক মজুরিও হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন। প্রতিবারের মতো এবারও দুর্গাপুজোর আয়োজনও করা হয়েছে বাগানে। মহাষ্টমীর পুজোর প্রস্তুতিতে যখন সকলে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বেজে ওঠে কারখানার সাইরেন। আচমকা সাইরেন বাজায় স্বাভাবিকভাবেই ঘাবড়ে যান শ্রমিকরা। ছুটে এসে দেখেন কারখানার দোতলার অফিস ঘরে আগুন লেগেছে। বের হচ্ছে ধোঁয়া। সঙ্গে সঙ্গে বাকি শ্রমিকদের জানানো হলে প্রাথমিকভাবে তাঁরাই বাগানের পাম্প মেশিনের সাহায্যে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিশেষ লাভ হয়নি। আগুন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দমকলবাহিনীকেও খবর দেওয়া হয়। দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে কারখানার অনেকটাই ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল।
[মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণের বার্তা আজও গ্রামে গ্রামে পৌঁছায় রিলে সিস্টেমে]
বাগানের সমস্ত শ্রমিকদের দেনা-পাওনার তথ্য সংক্রান্ত কাগজপত্র যে ঘরটিতে থাকত, তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আগুনে ভষ্মীভূত স্টাফ রুম, ম্যানেজার রুম ও গুদাম ঘর। যদিও আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। দুর্গাপুজোর মাঝে এমন ঘটনায় মুছড়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। দিশেহারা বাগান কর্মচারি থেকে শ্রমিক, সকলেই।