অরূপ বসাক, মালবাজার: কয়েকদিন ধরেই জঙ্গলের মধ্যে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে কে বা কারা। শনিবার রাতের ঘটনার পর, রবিবার সকালেও একই ছবি দেখা গেল মালবাজার মহকুমার গজলডোবা যাবার রাস্তার পাশে তারঘেরা জঙ্গলে। এই জঙ্গলটি গজলডোবা বিটের অধীনে পড়লেও হুঁশ নেই বনদপ্তরের। শীতের শেষে এই সময়টা জঙ্গলের ভিতরে শুকনো পাতায় ভরে যায়। আর সেই পাতার মধ্যে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ফলে অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে জঙ্গলের বন্যপ্রানীদের।
ওই এলাকার বাসিন্দা মানস রায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ হাতিদের প্রচণ্ড চিৎকার শুনে বাইরে আসি। বাইরে বেরিয়েই বুঝতে পারি আওয়াজটা আসছে জঙ্গলের ভিতর থেকে। কারণ জঙ্গলের চারদিকে তখন আগুন জ্বলছে।’ তিনি এই আগুন লাগানোর জন্য অভিযোগের আঙুল তুলেছেন চোরা শিকারিদের দিকে।
এব্যাপারে ওই তারঘেরা বনদপ্তরের রেঞ্জার দুলাল ঘোষ জানিয়েছেন, কে বা কারা এই জঙ্গলে আগুন লাগাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের হাতে ওই অপরাধীরা ধরা পড়বে।
[চুরি করতে এসে ভোটার কার্ড ফেলে উধাও, পুলিশের জালে চোর]
অন্যদিকে, এলাকার পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাসের সহ-সম্পাদক নিশীথ দাস জানান, এটা শিকারিরাই করে থাকতে পারে। কারণ অনেক সময় জঙ্গলের এক পাশে আগুন লাগিয়ে দিয়ে অন্য পাশে দাঁড়িয়ে থাকে তারা। কারন আগুনের প্রচণ্ড তাপে শুকর, হরিন, খরগোশের মত বন্য জন্তুরা জঙ্গলের বাইরে বেরিয়ে আসে। এতে তাদের অন্ধকারে জঙ্গলের মধ্যে পশু খুঁজতে যেতে হয় না, বরং পশুরাই সহজে তাদের জালে এসে ধরা দেয়। বনদপ্তরের কাছে তাদের দাবি, অবিলম্বে এবার এদিকে নজর দিক তারা। কারণ এতে যেমন বন্য প্রানীদের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই জঙ্গলের অনেক সরীসৃপ এই আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। আবার হাতিদের চলাফেরা করতে অসুবিধা হচ্ছে।
অনেকদিন ধরেই জঙ্গলের উপর নানারকমভাবে অত্যাচার চালাচ্ছেন চোরাশিকারিরা। কখনও চুরি যাচ্ছে চিতাবাঘের ছাল, তো কখনও আবার পাচার হয়ে যাচ্ছে হাতির দাঁত। তাই এবারে জঙ্গলের উপর শিকারিদের এই ধরনের আক্রমণ রুখতে আরও কড়া পাহারার বন্দোবস্ত করবে বনদপ্তর, এমনটাই এখন সূত্রের খবর।
[বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ, গ্রেপ্তার সিভিক ভলানটিয়ার]