Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিকিম থেকে গ্রেপ্তার হতে পারেন বিমল গুরুং

রওনা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের দুই সিনিয়র অফিসার।

GJM supremo Bimal Gurung likely to be arrested from Sikkim
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 7, 2017 5:27 am
  • Updated:September 7, 2017 5:34 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিকিম থেকে গ্রেপ্তার হতে পারেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের দুই সিনিয়র অফিসার সিকিম রওনা হয়েছেন বলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। আজই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। পাহাড়েও ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন মোর্চা প্রধান। বৃহস্পতিবারই বিনয় তামাংয়ের সমর্থনে পোস্টার পড়েছে দার্জিলিংয়ে। ওদিকে, বুধবারও বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠেছে পাহাড়। মিরিকে পুলিশের ক্যাম্পের কাছেই বিস্ফোরণ ঘটায় দুষ্কৃতীরা। বিস্ফোরণে সম্ভবত আইইডি ব্যবহার করা হতে পারে বলে অনুমান। পোস্টার দিয়ে পাহাড়ে সব বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নিল গোর্খা লিবারেশন আর্মি। গোর্খাল্যান্ডের বিরোধিতা করলে ফল ভাল হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জিএলএ। তবে পাহাড়বাসীদের একাংশও এবার চাইছেন, স্থিতাবস্থা ফিরুক। অচলাবস্থার জেরে আসন্ন দুর্গাপুজোয় পাহাড়ের পর্যটনশিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল, অভিযোগ স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের।

[পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান আনিসুর রহমানের ছ’বছরের শাস্তি, তৃণমূলে চাঞ্চল্য]

সবমিলিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে এবার কার্যত সমঝোতার বার্তা দিলেন মোর্চার ‘ফেরার’ নেতা। গোপন ডেরা থেকে অডিও টেপ মারফত দলের ‘বিদ্রোহী’ নেতা বিনয় তামাং ও অনিত থাপার উদ্দেশে একসঙ্গে থাকার আবেদন জানালেন। বিনয়রা অবশ্য সে জন্য পাল্টা শর্ত চাপিয়েছেন। পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর ডাক দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় দার্জিলিংয়ে বিনয়ের ডাকা বন্‌ধ বিরোধী মোমবাতি মিছিলে শামিল হন বহু সাধারণ মানুষ, মোর্চার রক্তচক্ষুর পরোয়া না করেই। তারই মধ্যে বিমল গুরুং, তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং ও প্রকাশ গুরুং—সহ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আটজনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সিআইডি। দার্জিলিংয়ের মালিধুরায় গুরুংয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা পাবলিক স্কুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। আর মাঝখানে উধাও হয়ে যাওয়ার পরে বুধবার দুপুরে ফের সিকিমের নামচিতে গুরুংয়ের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

Advertisement

পাহাড়ের আমজনতার টানা ভোগান্তির অবসানের লক্ষ্যে নবান্নের বৈঠক সেরে কার্শিয়াং ফিরে বন্‌ধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন মোর্চার ‘নতুন মুখ’ বিনয় তামাং। শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং গোপন ডেরা থেকে অডিও-বার্তায় নির্দেশ দেন, বন্‌ধ চলবে। শুধু তাই নয়, বিনয় ও অনিতের গায়ে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা সেঁটে জানিয়ে দেন, দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। এহেন একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিনয় শিবির কার্যত জেহাদ ঘোষণা করে। বিনয়-অনিত হুমকি দেন, তাঁরা কোর্টে তো যাবেনই, পাশাপাশি বিমল গুরুং-রোশন গিরিদের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি ফাঁস করে দেবেন জনসমক্ষে। দার্জিলিং থেকে পোখরা-কাঠমাণ্ডু, এমনকী সুদূর ফ্লোরিডায় কার কত বেনামী সম্পত্তি, সব সামনে নিয়ে আসার হুঁশিয়ারিও দেন। ওয়াকিবহাল মহলের পর্যবেক্ষণ, বিনয়-অনিতদের পিছনে যথেষ্ট জনসমর্থন রয়েছে বুঝেই বিমল গুরুং এবার নিজের অস্তিত্বরক্ষার তাগিদে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন।

Advertisement

[গৌতম দেবের উপস্থিতিতে সচল মিরিকের গাড়িধুরা, পানিঘাটা]

গুরুংয়ের অডিও-বার্তা দার্জিলিংয়ে এসে পৌঁছলে দলের সমর্থকদের তা মোবাইলে শোনানো হয়। বার্তায় গুরুংয়ের আবেদন, বিনয় তামাং ও অনিত থাপা যেন মোর্চায় ফিরে আসেন। গুরুং তাঁকে মারতে ভাড়াটে খুনিদের সুপারি দিয়েছেন – বিনয়ের এই অভিযোগকেও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়েছেন মোর্চা সুপ্রিমো। যদিও বরফ যে সহজে গলার নয়, বিনয়ের কথায় সে ইঙ্গিত স্পষ্ট। মোমবাতি মিছিলের আগে বিনয় সাফ জানান, “বাইরে থেকে এসব বললে কোনও লাভ হবে না। গুরুং সিকিমে বসে কেন? জনতার আন্দোলন তো দার্জিলিংয়ে হচ্ছে। ওঁকে এখানে এসেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। জনতা যে পথে চাইবে, সে পথেই আন্দোলন হবে। তাহলেই আমরা ওঁর পাশে থাকব।”

এমনিতেই গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে দেশদ্রোহিতা-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। জারি হয়েছে লুকআউট নোটিস। উপরন্তু দলের ‘অ্যাকশন স্কোয়াড’—এর সদস্যদের নামের তালিকাও পুলিশ পেয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে গুরুংয়ের পায়ের নিচের মাটি ক্রমশ আলগা হচ্ছে। পাহাড়ের আমজনতাও বন্‌ধের বিরুদ্ধে একটু একটু করে সরব হচ্ছেন। পাহাড়ি রাজনীতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোকজনের মতে, এই পরিস্থিতিতে বিনয়-অনিতদের মোর্চায় ফেরার অনুরোধ জানানো ছাড়া গুরুংয়ের সামনে পথ নেই। আবার লুকআউট নোটিস সত্ত্বেও সিকিম সরকার গুরুংকে আশ্রয় তো দিচ্ছেই, তার উপর পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি-র চিঠি প্রকাশ্যে আসার পরও সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিংয়ের ‘অসহযোগিতা’য় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

[আধুনিক সমাজকে ‘আলবিদা’ জানিয়ে কুড়ি বছর গাছের কোটরে জিগর ওরাওঁ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ