Advertisement
Advertisement
Gram Banglar Durga Puja

Gram Banglar Durga Puja: পূর্ব থেকে পশ্চিমে নিজেই ঘুরে যায় ঘট, কাঁথি রাজবাড়ির পুজোর মাহাত্ম্য গায়ে কাঁটা দেবে

প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন পুজো স্বমহিমায় আজও সমান উজ্জ্বল।

Gram Banglar Durga Puja: A unique Story about Kanthi's 'Gar er Raja's Puja | Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 14, 2023 2:28 pm
  • Updated:October 14, 2023 2:28 pm

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে হারিয়েছে জৌলুস। তবে আজও একইরকম নিয়ম মেনে চলছে কাঁথির কিশোরনগর গড়ের রাজাযাদব রাম রায়ের দুর্গাপুজোর আয়োজন। প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন পুজো স্বমহিমায় আজও সমান উজ্জ্বল।

প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে কাঁথির কিশোরনগর গড়ের রাজবাড়ির পুজো শুরু হয়। জমিদার রাজা যাদবরাম রায়ই পুজোর সূচনা করেন। কিশোরনগর গড়ের দুর্গাপুজো হয় পশ্চিমমুখী ঘটে। শোনা যায় নরোত্তম বর নামে এক মাঝির কণ্ঠে চণ্ডীমঙ্গল গান শোনার জন্য স্বয়ং দেবী দুর্গা পশ্চিমমুখী হয়েছিলেন। তারপর থেকে সেভাবেই ঘট স্থাপন করা হয়।

Advertisement

একসময় সন্ধিপুজোয় মহিষ বলির প্রথা প্রচলন ছিল। প্রতি বছর নিয়ম মেনে মহিষ বলি দেওয়া হত। মহিষ বলি চালু ছিল প্রায় আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত মহিষের মৃত্যু হয়। বন্ধ হয়ে যায় মহিষ বলির প্রথা। এখন আখ ও চাল কুমড়ো বলি হয়। তবে এখনও বলি দেওয়ার অস্ত্র পূজিত হয়। মন্দিরের ডান দিকে একটি চালাঘরে বলি দেওয়ার সেই অস্ত্রগুলো আচার মেনে পূজিত হয়ে আসছে কয়েকশো বছর ধরেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পুজোয় গান গাইবে রোবট! ২০ বছর পরের ছবি শিল্পীদের ভাবনায়]

জমিদার বংশের সদস্য কৃষ্ণা মিত্র চৌধুরী বলেন, “ছোট বেলায় শুনেছি জমিদার যাদবরামের রায়ের দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর। একবার দুর্গাপঞ্চমীর গভীর রাতে দেবী নিজে কিশোরনগর থেকে ছমাইল দূরে মশাগাঁ গ্রামের খালের ঘাটে ষোড়শীর বেশে উপস্থিত হন। ঘাটের মাঝি নরোত্তম বরকে অনুরোধ করলেন কিশোরনগর গড়ের পুজো দেখতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। নৌকায় খাল পার করে দেওয়ার জন্য আকুতি মিনতি করতে থাকেন দেবী। নরোত্তম খাল পার করে দিলে পারানির কড়ির বদলে ষোড়শী তাকে দিলেন একটি পুঁথি। কিন্তু নিরক্ষর নরোত্তম বলেন, ‘‘মূর্খ আমি। পুঁথি কোন কাজে লাগবে?’’ তখন ষোড়শী বলেন, ওই পুঁথি নিয়ে কিশোরনগর গড়ে গিয়ে দুর্গামন্দিরে গান করতে। সেই মতো নরোত্তম দুর্গাপুজোয় চণ্ডীমঙ্গল গাইতে এলেন। রাজা যাদবরাম রায় জাত্যাভিমানে তাকে মন্দিরে উঠতে দেননি। মনের দুঃখে নরোত্তম মন্দিরের পিছনে পশ্চিমদিকে বসে চণ্ডীমঙ্গল গান শুরু করেন। আর ঠিক তখনই দেবীর বোধন ঘট পূর্বদিক থেকে পশ্চিমমুখে ঘুরে যায় আপনা আপনি। ভুল বোঝেন রাজা। সেই থেকে পশ্চিমমুখী ঘটেই দেবীদুর্গার আরাধনা হয়ে আসছে।”

সময় বদলে গিয়েছে। গড়ের ঝাড়লণ্ঠন, নাটমন্দির, নহবত খানা হারিয়ে গিয়েছে কবেই। তবু আজও পঞ্চমুণ্ডির আসনে পুরনো আটচালা মন্দিরেই এখনও পুজো হয়। সেই জাঁকজমক নেই। তবে প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারেই দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। দুর্গাষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত কিশোরনগর গড়ে মেলা বসে। সাধারণ মানুষের কাছে তা ‘গড়ের মেলা’ হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেছে।
দেখুন ভিডিও:

[আরও পড়ুন: Bonedi Barir Durga Puja: ইতিহাসের পাতায় আজও স্মরণীয় চন্দননগরের বসুবাড়ির পুজো, জেনে নিন মাহাত্ম্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ