বাবুল হক, মালদহ: এবার গরমকালেও মিলবে শীতের সবজি। সৌজন্যে একশো দিনের প্রকল্প। জেলার শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়া আটকাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে মালদহ জেলার উদ্যানপালন দপ্তর। একশোর প্রকল্পের ‘অকাল’ সবজির চাষ করছেন কৃষকরা। জেলার উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, বছর খানেক আগেও যে এলাকাগুলিতে কার্যত চাষই হত না কিংবা চাষ হলেও ফসলে দাম পেতেন না কৃষকরা, সেইসব এলাকায় অকাল সবজি ফলিয়ে লাভের মুখ দেখেছেন কৃষকরা। তাই মাত্র এক বছরের কাজে আশায় ভিনরাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে ফেলা গিয়েছে।
[রেল বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা, মেট্রো সম্প্রসারণ কার্যত হিমঘরে]
রাজ্যের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির অন্যতম মালদহ। এই জেলা থেকে কাজের আশায় ভিনরাজ্য বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে যান শ্রমিকরা। অনেকে আবার মহারাষ্ট্র, রাজস্থানেও যান। দিন কয়েক আগেই রাজস্থানে লাভ জেহাদের অভিযোগে এ রাজ্যের যে শ্রমিককে খুন করা হয়েছিল, সেই মহম্মদ আফরাজুল মালদহেরই বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু, জেলার উদ্যানপালন দপ্তরের অভিনব উদ্যোগে পরিস্থিতি এখন অনেকটা পালটে গিয়েছে। ফের চাষবাসে মন দিয়েছেন মোথাবাড়ির সাহিদুর রহমান, মফিজুল ইসলামরা। ঘুচেছে আর্থিক অনটন।
[পাশাপাশি জিএনএলএফ-মোর্চা, পাহাড়ের রাজনীতিতে নজিরবিহীন বার্তা মমতার]
কীভাবে এমনটা ঘটল? কাজের সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতেন কৃষকদের একটা বড় অংশ। মালদহে বিঘার পর বিঘা জমিতে চাষ হত না। কিন্তু, এবার জেলার কৃষকদের স্বনির্ভর করতে উদ্যোগ নিয়েছে উদ্যানপালন দপ্তর। একশোদিনের প্রকল্পের পতিত জমিতে শুরু হয়েছে অকাল সবজির চাষ। গরমকালে শীতের সবজি চাষ করে দ্বিগুণ দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাগিচাপালন দফতরের যৌথ উদ্যোগে একশো দিনের প্রকল্পের জেলার সাতটি জায়গায় চলছে এই কর্মকাণ্ড। চাষের জন্য কৃষকদের অর্থও বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না। ফলে মুনাফাও বেড়েছে। মালদহের কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের বিডিও অরিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেও যুক্ত করা হয়েছে। ফসল বিক্রি করে যা মুনাফা হচ্ছে, তার ৭৫ শতাংশ পাচ্ছেন কৃষকরা। বাকি ২৫ শতাংশ পঞ্চায়েতকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, ‘গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে এলাকার গরমকালে শীতের ফসল ও শীতকালে গরমকালের ফসল ফলিয়ে বেশি পরিমাণে মুনাফা করেছেন কৃষকরা। ফলে অনেক কৃষক আর ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে যাচ্ছেন না। এই প্রকল্পে যোগ দেওয়ার দিতে চেয়ে আবেদন করেছেন বহু কৃষক ও শ্রমিক।’
[নাবালিকা বিয়ে ভণ্ডুল, পুলিশের চাপে পণের টাকা ফেরাল ‘গুণধর’ পাত্র]
জানা গিয়েছে, ১০ জন করে কৃষকদের একটি দল তৈরি করে এই অকাল সবজির চাষ করা হচ্ছে। উৎপাদিত ফসলে কোনও রাসায়নিকও ব্যবহার করা হয় না। যেহেতু সরকারি প্রকল্পের এই চাষ হচ্ছে, তাই আলাদা করে কোনও অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। পুরো খরচটাই বহন করে সরকার। আগামী এক বছরের মধ্যে উৎপাদন যদি আশানুরূপভাবে বাড়ে, তাহলে সবজি বাইরেও রপ্তানি করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন।
[গঙ্গায় কুমির, নদীর পাড়ে উপচে পড়া ভিড় ভাঙ্গাপাড়ায়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.