Advertisement
Advertisement

লক্ষ্মীপুজোয় জাগে ‘ভূতের গ্রাম’, সেলফি তোলার হিড়িক নতুন প্রজন্মের

নয়া ট্রেন্ড ‘সেলফি উইথ ভূতগ্রাম’।

Haunted village in Asansol becomes selfie spot on Laxmi Puja
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 4, 2017 3:18 pm
  • Updated:October 4, 2017 3:18 pm

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: বিগ বাজেট বা থিমের পুজো নয়। নেই কোনও ঐতিহ্যের গল্পগাথা। তবু লক্ষ্মীপুজো এলেই বাইরের মানুষ ভিড় জমান এই গ্রামে। কিন্তু বাইরে দর্শনার্থীদের দেখে মোটেই খুশি নন গ্রামবাসীরা। কারণ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতে এই গ্রামে গেলে চোখে পড়বে সেলফি তুলতে ব্যস্ত একঝাঁক জেন-ওয়াই। সেই ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ট্রেন্ড ক্রমেই বাড়ছে আজকের নেটিজেনদের মধ্যে।  সেলফি তোলার সঙ্গেসঙ্গেই আপলোড হয়ে যাচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে। সেই পোস্টে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখা ‘#সেলফি উইথ ভূতগ্রাম’!

BHOOT-VILLAGE.jpg-1

Advertisement

[শারদ কার্নিভালে সেরা ট্যাবলোর পুরস্কার পাচ্ছে শহরের এই পুজোগুলি]

Advertisement

আর বাইরের ছেলেদের এই কাণ্ডকারখানা দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছেন গ্রামবাসীরা। লক্ষ্মীপুজো এলেই স্মৃতি উসকে ওঠে কুলটির বেনাগ্রামের। সারা বছর ঘুমিয়ে থাকা নিঝুম গ্রামটি জেগে ওঠে কোজাগরীর রাতে। চিত্তররঞ্জন-নিয়ামতপুর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাঁদিকে পড়ে জঙ্গলে ঘেরা পাকা রাস্তা। সেই পথ ধরে সামান্য এগোলেই কুলটির এই বেনাগ্রাম। অন্য সময়ে সেখানে ঢুকলে গা ছমছম করাটা রীতিমতো দস্তুর। তবে আগে ছবিটা এমন ছিল না। এক সময়ে প্রায় শ’খানেক পরিবারের বাস ছিল এই গ্রামে। বছর দশেক আগে রেললাইন লাগোয়া এলাকায় দুষ্কৃতীদের উৎপাত বাড়তে থাকে। বাসিন্দারা জানান, প্রায়দিনই বিভিন্ন বাড়ির দরজায় টোকা মারার আওয়াজ শোনা যেত। গ্রামে নানা উৎপাত দেখা দিলেও, কখনও দুষ্কৃতীদের খোঁজ না মেলায় ‘ভূত’ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। একে-একে সব পরিবারই গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়। রটে যায় ভূতের ভয়ে গাঁ উজার হয়েছে। তখন থেকেই খবরের শিরোনামে কুলটির এই গ্রাম।

BHOOT-VILLAGE.jpg-2

[রেড রোডে পুজো কার্নিভাল, এবার কী কী চমক থাকছে?]

তবে সারা বছর না থাকলেও লক্ষ্মীপুজোর সময় আলো জ্বলে গ্রামে। শুধু কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে জনশূন্য গ্রামে বাসিন্দারা এক দিনের জন্য ফিরে আসেন। গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেও তাঁরা লক্ষ্মীপুজো বন্ধ হতে দেননি। নিয়মমাফিক পুজো হয়, সন্ধ্যা আরতি হয়, প্রসাদ বিতরণ-সহ নানাবিধ আচার-অনুষ্ঠানও হয়। তবে আসানসোল পুরনিগমের আওতায় আসার পর গ্রামের রাস্তা কংক্রিটের হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর বাদল পুইতন্ডি জানান, পানীয় জল আর বিদ্যুতৎ সংযোগের কাজ এখনও বাকি। ফের গ্রামে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় নতুন করে জাঁক বেড়েছে লক্ষ্মীপুজোর। এই সুযোগে গ্রামবাসীরা চাইছেন, এবার ‘ভূত গ্রামের’ তকমা চিরতরে ঘুচুক। তাই বহিরাগতদের দেখলেই ভ্রু কুঁচকাচ্ছেন তাঁরা। বেনাগ্রামে ঝটিকা সফরে আসা নবীনদের সাফ কথা,  কৃত্রিম আলো, ঢাক, উলু, শঙ্খধ্বনি আর গ্রামবাসীদের এমন রাত জাগরণের অ্যাডভেঞ্চার কোথায় মিলবে আর? তাদের কাছে লক্ষ্মীপুজো মানেই ‘#ভূতগ্রাম@বেনাগ্রাম’ই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ