স্ত্রী রশিদা বিবির সঙ্গে সাংসদ খলিলুর রহমান। নিজস্ব চিত্র।
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সমাজসেবী হিসাবে স্বামীকে পছন্দ, রাজনীতিবিদ হিসাবে একেবারে না পসন্দ। স্বামী স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে সরে গেলে গর্বিত হবেন, এমন দাবি জঙ্গিপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের স্ত্রী রাশেদা বিবির। কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, অনেক সময় দলে-বিরোধীদের কাছে কটূক্তির শিকার হতে হয় খলিলুরকে। যা মেনে নিতে পারেন না তিনি। রশিদা বিবির কথায়, “ওঁর মতো ব্যক্তি রাজনীতিতে বেমানান।”
সোমবার দুপুরে সংবাদ প্রতিদিনের মুখোমুখি হয়েছিলেন জঙ্গিপুরের দ্বিতীয়বারের সাংসদ খলিলুর রহমানের স্ত্রী। তিনি বলেন, “একসঙ্গে ৪৩ বছর সংসার করছি। দুই সন্তানের দায়িত্ববান পিতা। যৌথ পরিবারের দায়িত্ববান ব্যক্তি। স্বামী হলেও উনি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। সমাজসেবা ও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেন সবসময়।” এর পরই রাশেদা বিবির আক্ষেপ,”স্বামী হিসাবে উনি আমার অহংকার। কিন্তু রাজনীতিবিদ হিসাবে না পসন্দ। কখনও চাইনি উনি রাজনীতিতে শামিল হন। এখনও তা চাই না।” স্ত্রীর কথায়, খলিলুর রহমান মৃদুভাষী, দয়ালু। মাছ-ভাত খেতে পছন্দ করেন। মানুষের উপকার করা যায় কীভাবে, সেটা নিয়ে সারাক্ষণ চিন্তা করেন। অবসর সময়ে বই পড়েন। পুরনো ক্লাসিকাল গান শুনতে পছন্দ করেন। “যে কোনও বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয় খোলা মনে”, বলছেন রশিদা বিবি। তাঁর আক্ষেপ, সাংসদ হওয়ার পর পরিবারে খুব কম সময় দিতে পারেন।
সামশেরগঞ্জ ব্লকে উচ্চশিক্ষার জন্য কোনও কলেজ না থাকায় স্থানীয় ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিদায়ী সাংসদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে নূর মহম্মদ কলেজ। মহেশপুরে নূর জাহানার স্মৃতি হাই মাদ্রাসা ও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি হয়েছে তাঁরই উদ্যোগে। তবু রশিদা বলছেন, “মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতিতে আসতে হবে আমি তা মনে করি না। স্ত্রী হিসাবে স্বামীর রাজনৈতিক যোগদান প্রথম দিন থেকে আমি ঘোর বিরোধী ছিলাম। আজও আছি। যেদিন স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে সরে আসবেন আমি খুব খুশি হব।” ‘অভিমানী’ রশিদা বিবি বলছেন, “যখন সংবাদমাধ্যমে ওঁর সম্পর্কে দলের কোনও বিধায়ক বা নেতৃত্ব কটু কথা বলেন, খুব অভিমান হয়। মনে হয়, কেন তিনি রাজনীতিতে আছেন। ওঁর মতো ব্যক্তি রাজনীতিতে বেমামান। আমি চাই, স্বেচ্ছায় উনি রাজনীতি থেকে সরে আসুন। “
স্বামী সাংসদ হিসাবে দিল্লিতে আবাসন পেলেও একদিনের জন্য স্ত্রী রাশেদাকে নিয়ে যেতে পারেননি খলিলুর রহমান। ২০১১ সালে সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস খলিলুর রহমানকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিলেও স্ত্রী রাশেদা বিবি ও মা জাহান্নারা বেগমের আপওির জন্য শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি হননি। ২০১৬ সালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান। ২০১৯ সালে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি হন খলিলুর। এবার দ্বিতীয়বার জঙ্গিপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.