সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে। পুরুষ বিভাগে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর করে রোগীর পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়ত্তে আনে পরিস্থিতি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মৃতের ছেলে ও তাঁর এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন পুরুলিয়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হুচুকপাড়ার বাসিন্দা প্রণব রায়। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দেবেন দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে। প্রথমে তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় পুরুষ বিভাগে। পরিবারের অভিযোগ, পুরুষ বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও প্রণববাবুর চিকিৎসা শুরু হয়নি। রাতের দিকে তাঁর অবস্থা সংকটজনক হলে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। রাতেই সেখানে মৃত্যু হয় প্রণববাবুর।
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবারের সদস্যরা। বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তোলে তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। এরপর গভীর রাতে ফের হাসপাতালে চড়াও হয় রোগীর পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, পুরুষ বিভাগে ঢুকে মৃতের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সুমন্ত দাসকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকী ওয়ার্ডে থাকা একটি লোহার টুল দিয়ে চিকিৎসককে মারধরের চেষ্টা করে মৃতের ছেলে ও তাঁর বন্ধু। দেখতে পেয়ে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতের ছেলে কৃষেন্দু রায় ও তার বন্ধু রাহুল রায়কে গ্রেপ্তার করে। রাতেই থানায় যান দেবেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী ও এমএসভিপি শ্যামাপ্রসাদ মিত্র। জানা গিয়েছে, এমএসভিপির অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তদের।
মঙ্গলবার সকালে প্রণববাবু সৎকার করা হবে। সেখানে ধৃত মৃতের ছেলের থাকা বাধ্যতামূলক। এই পরিস্থিতি জেনেও কেন মৃতের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হল এই অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ করে রোগীর পরিবার। এখনও থমথমে হাসপাতাল। জানা গিয়েছে, বিবেচনা করে স্থির করা হয়েছে যে মঙ্গলবার কিছুক্ষণের জন্য ছাড়া হবে ধৃত কৃষেন্দুকে।
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.