ধীমান রায়, কাটোয়া: ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়৷ তা থেকে বন্ধু৷ আর অবশেষে বয়সে ছোট প্রেমিককেই বিয়ে করেন এক মহিলা৷ প্রথমপক্ষের দুই সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে দ্বিতীয় স্বামীর স্বামীর কর্মস্থলেই থাকতেন তিনি৷ মাঝেমধ্যে মা ও সৎ বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসত মহিলার বছর পনেরোর মেয়ে৷ আপাত দৃষ্টিতে সব স্বাভাবিক হলেও, এরই মধ্যে গড়ে ওঠে অন্য এক রসায়ন৷ যা ওই মহিলার জীবনে ডেকে আনে চরম বিপত্তি৷ শুক্রবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে মহিলা অভিযোগ করেন, নাবালিকা মেয়েকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে পালিয়েছে, তাঁর দ্বিতীয়পক্ষের স্বামী অর্থাৎ মেয়েটির সৎ বাবা৷ আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কয়রাপুর গ্রামে৷
[ আরও পড়ুন: দু’শো কোটির বিনিয়োগ গুটিয়ে রাজ্য ছাড়ার হুমকি শিল্পদ্যোগীর, কাঠগড়ায় পর্যটনমন্ত্রী ]
না গিয়েছে, গত রবিবার থেকে নবম শ্রেণির মেয়ের ও তাঁর দ্বিতীয়পক্ষের স্বামীর হদিশ পাচ্ছেন না ওই মহিলা৷ শুক্রবার এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে তিনি প্রথমে যান গুসকরা পুলিশ ফাঁড়িতে। তারপর আউশগ্রামের বিডিরও কাছে লিখিত ভাবে ঘটনা জানান ওই মহিলা৷ মেয়েকে খুঁজে দেওয়ারও আরজি জানান তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ৩৫-এর ওই মহিলার বাপের বাড়ি কাটোয়া শহরের বাগানপাড়ায়। প্রায় ১৭ বছর আগে আউশগ্রামের কয়রাপুর গ্রামে বিয়ে হয় তার। প্রথমপক্ষের ওই মেয়েটি ভাতারের ওড়গ্রাম চতুস্পল্লি হাই মাদ্রাসায় নবম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে কয়রাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। গৃহবধূ জানান, আড়াই বছর আগে আউশগ্রামের বেরেণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মণ্ডল নামে বছর বত্রিশের এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় তার। সেই আলাপ থেকেই প্রথমে বন্ধুত্ব হয় তাদের৷ তারপর তা প্রেমে পরিণত হয়৷ তারপর প্রথমপক্ষের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করে, আলাউদ্দিনের সঙ্গে রেজেস্ট্রি ম্যারেজ করে করেন তিনি। প্রায় একবছর বেরেণ্ডা গ্রামে দ্বিতীয়পক্ষের শ্বশুরবাড়িতে কাটান ওই মহিলা। তবে ছেলেমেয়ে থাকে কয়রাপুর গ্রামে প্রথমপক্ষের শ্বশুর বাড়িতে৷ বছরখানেক বেরেণ্ডা গ্রামে থাকার পর আলাউদ্দিন তার স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় আসে। বর্তমানে কলকাতার একটি ত্রিপল কারখানায় কাজে করত দু’জন।
[ আরও পড়ুন: অপরাধের বিচারে স্বয়ং মা, ঝাড়গ্রামের পুজোয় এবারের চমক ‘যমালয়ে জীবন্ত দুর্গা’]
মহিলা জানান, ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেখা করতে প্রথমপক্ষের শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর। ছেলেমেয়েও মাঝেমধ্যে কলকাতায় আসত৷ মাসখানেক আগে মেয়েকে আলাউদ্দিনের সঙ্গে বিছানায় আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তিনি। বেগতিক বুঝে ক্ষমা চেয়ে নেন আলাউদ্দিন। এরপর মেয়েকে কয়রাপুরে পাঠিয়ে দেন মহিলা৷ কিন্তু গত রবিবার কয়রাপুর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় মেয়ে। ওদিন থেকে স্বামী আলাউদ্দিনেরও খোঁজ নেই। মহিলা বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, রবিবার আমার মেয়ে, ওর এক বান্ধবীকে ফোনে করেছিল৷ ফোনে ওকে বলেছে, আব্বুর সঙ্গে চেন্নাই যাচ্ছি। এই বলেই ফোন কেটে দেয় সে।” মেয়ের খোঁজ পেতে শুক্রবার পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা৷ আউশগ্রামের বিডিরও কাছেও লিখিত ভাবে ঘটনার বিবরণ জানান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.