Advertisement
Advertisement

Breaking News

পরকীয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে টুকরো টুকরো করে আত্মসমর্পণ স্বামীর

গঙ্গার ঘাটে ফলের বাক্সে মিলল বধূর দেহ...

Husband killed wife for having Extra-marital affair
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 6, 2017 3:49 pm
  • Updated:July 6, 2017 3:49 pm

নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: সকাল সকাল এমন কাগজের ফলের বাক্স গুছিয়ে রোজই বেরিয়ে পড়ত ছোটু। তাই কেউ ভাবতেই পারেনি স্ত্রীকে টুকরো টুকরো করে কেটে প্লাস্টিক জড়িয়ে ওই বাক্সেই নিয়ে যাবে সে! শেষে গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। ধরাধরি করতেই সত্যিটা বেরিয়ে পড়ে। স্বীকার করে নেয়, ২৩ বছরের স্ত্রী সাবানা বেগমকে মেরে ফেলেছে সে। ছেলের পরিবারের আবার দাবি, শয়তান ভর করেছিল বধূর শরীরে। অশান্তি তাই লেগেই থাকত। দু’জনের মধ্যে মারামারি পর্যন্ত হত বলে জানিয়েছে ছোটুর পরিবার। পরিবারের তাই দাবি, আত্মরক্ষায় সে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে স্ত্রীকে।

বুধবার রাতে শ্রীরামপুর শীলবাগানে এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা।

Advertisement

স্ত্রীকে খুন করে সটান হাজির পুলিশের কাছে। যে ঘটনা পুলিশের কাছে একেবারে আকস্মিক। গোটা রাত একেবারে চুপচাপ। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই সন্তর্পণে স্ত্রীর দেহ কাগজের বাক্সে পুরে গঙ্গায় ফেলে আসার সিদ্ধান্ত নেয় সে। তার পর গঙ্গার পাড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ে গিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ। পুলিশের কাছে ছোটু স্বীকার করে নেয় স্ত্রীকে খুনের ঘটনা। জেরায় সে পাল্টা অভিযোগের সুরে জানায়, একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিল স্ত্রী। তা নিয়ে রোজ অশান্তি লেগে থাকত। শেষপর্যন্ত তাঁকে খুনের সিদ্ধান্তই নিয়ে নেয় ছোটু। বুধবার পরিস্থিতি চরমে পৌঁছলে এক নিমেষে ছোটু শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে স্ত্রীকে। তার পর চেয়েছিল ভোরের আলো ফুটলেই গঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে।

Advertisement

[বাদুড়িয়া, দেগঙ্গায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ প্রশাসন, তোপ কৈলাস বিজয়বর্গীয়র]

বছর দুয়েক আগে এই সাবানাকে নিয়েই পালায় ছোটু। সাবানার বাপের বাড়ি বিহারের বালিয়ায়। পেশায় জুতোর ব্যবসায়ী ছোটু। সেখানে ব্যবসার সূত্রেই তার যাতায়াত ছিল। সেখানেই সাবানার সঙ্গে তার পরিচয়। তার পরই পালিয়ে বিয়ে। বিয়ে হয় মেয়ের বাপের বাড়ির অমতে। প্রথম প্রথম সুখের সংসার হলেও পাড়া প্রতিবেশী বলছে, টুকটাক গন্ডগোল লেগে থাকত। তবে সেসব সংসারের গন্ডগোল বলে কেউ আমল দেয়নি। পরে এই অশান্তি বাড়তে থাকে। মৃতের পরিবারের দাবি, বিয়ে নিজেদের মতে করলেও তাদের গন্ডগোল শুরু হয় বিয়ের পরপরই। পণের জন্য চাপ দিতে থাকে স্ত্রীকে। বারবার তা নিয়ে গন্ডগোল বাধে। পরে তাদের বিয়ে মেনে নিলে মেয়ের পরিবারও সেই অশান্তিতে হস্তক্ষেপে করে। বহুবার সেই অশান্তি মেটাতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। দিনের পর দিন সেই গন্ডগোল বাড়তে থাকে বলে জানায় মেয়ের পরিবার। পণ হিসাবে এক সময় ১ লক্ষ টাকা ও একটি গাড়ি চেয়ে বসে ছোটু বলে অভিযোগ। না পাওয়ায় চলে অত্যাচার। বেশ কয়েকবার তাকে মারধরও করে।

কিন্তু এসবই একেবারে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ধৃত ছোটু। খুনের কথা স্বীকার করেই সে বলেছে, তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি আরও একাধিক সম্পর্ক ছিল তার স্ত্রীয়ের। সেটাই সে মেনে নিতে পারেনি। তাই মেরে ফেলেছে স্ত্রীকে। পাড়ার লোকেরা আবার জানিয়েছে, পরে তারা জানতে পারে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আসলে ছিল স্বামীরই। সেই ঘটনা চাপা দিতেই শয়তান ভর করার তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে। পুলিশ এর মধ্যে জানাচ্ছে, খুব অল্প সময় ছিল খুনির হাতে। রাতের ঝগড়া থেকে খুন। ঠান্ডা মাথায় তার পর স্ত্রীর দেহ প্যাকেটবন্দি করে সোজা বেরিয়ে যায় সে।

[বাদুড়িয়ায় রেল ও রাস্তা অবরোধ, বন্ধ নেট পরিষেবা]

এখানেই নিজের ছেলেকে বাঁচাতে গল্প ফাঁদছে ছোটুর পরিবার বলে মনে করছে পুলিশ। তার পরিবার জানিয়েছে, বিয়ের পরপরই বধূর উপর শয়তান ভর করেছিল। সেই শয়তানের প্রভাব কাটাতে বর্ধমানের মেমারিতে একটি মাজারে ছোটু স্ত্রীকে নিয়ে যেত। আজও সেই মাজারে স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাল রাতে আবার গন্ডগোল বাধে। ছোটুর বাবা নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, গত রাতে অশান্তির জেরে দু’জনের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। তখনও শয়তান ভর করেছিল তাঁর উপর। স্বামীর গলা টিপে ধরে সে। ছাড়াতে যান নিজামউদ্দিন। রাতে সব ঠান্ডা হয়ে যায়। ভোরের নমাজ পড়া শেষে বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন, ছেলে বাইক নিয়ে সকালেই বেরিয়ে গিয়েছে। তার পর জানা যায়, স্ত্রীও বাড়ি নেই। এর পরই ঘটনার কথা জানাজানি হয়। এই ঘটনা মিথ্যা বলে জানিয়েছে পাড়া প্রতিবেশীও। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ছেলেরই। তার জেরেই অশান্তি। সেই ঘটনা চাপা দিতেই শয়তানের তত্ত্ব খাড়া করতে চাইছে পরিবার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ