Advertisement
Advertisement

Breaking News

কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ফ্যাশন শোয়ে মাতল বীরভূমের এই ক্লাব

রবিবার সকালে এমনই শো দেখল সিউড়ির বিদেশি পাড়া।

Idol emersion in Birbhum

সিউড়িতে কালীপুজোর বিসর্জনে ফ্যাশন শোয়ে কচিকাঁচারা। ছবি : বাসুদেব ঘোষ।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:November 11, 2018 8:18 pm
  • Updated:November 11, 2018 8:18 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা না ফ্যাশন শো। ঠিক কোন নামে সিউড়ির বিদেশি পাড়ার কালীপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনকে ব্যাখ্যা করা হবে কেউ বলতে পারলেন না। তবে ব্যাখ্যা হোক বা না হোক নিত্যনতুন সাজে উৎসাহের কোনও ঘাটতি দেখা গেল না। প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় রবিবার সকালে এমনই শো দেখল সিউড়ির বিদেশি পাড়া। একমাথা সাদা চুলের সদস্য থেকে শুরু করে সবে যে স্কুল ছুটির ফাঁকে ক্লাবে উঁকিঝুঁকি মারছে, তাকেও দেখবেন কেমন সাজগোজ করে শোভাযাত্রায় হাঁটছে। এই শোভাযাত্রায় সবথেকে বেশি চমক থাকে বিদেশি পাড়ার স্বদেশি ছেলেদের চুলের স্টাইলে। স্থানীয়দের কথায় এই শোভাযাত্রাতেই হেয়ার অফ দ্য ইয়ারকে দেখা যায়। কেউ বা আনারস ছাঁটের চুল নিয়ে ভাবগম্ভীর মুখে হেঁটে যাচ্ছেন। কেউ আবার কেতাদুরস্ত সাজতে গোটা মাথাটাই কমলা রঙে রাঙিয়েছেন। বছর ঘুরে কালীপুজোর নিরঞ্জনের সময় এলেই স্থানীয় বামদেব ক্লাবের এই শোভাযাত্রা দেখতে মুখিয়ে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা।

ক্লাবের সম্পাদক প্রশান্ত হাজরা বলেন, বিসর্জনটাই আমাদের শ্রেষ্ঠ চমক। পুজো দেখতে একটা ভিড় তো হয়ই। কিন্তু প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে ভিড় একেবারে উপচে পড়ে। এতো শুধু শোভাযাত্রা নয়, এককথায় ক্লাবের সদস্যদের ফ্যাশন শো বলতে পারেন।তাই আমাদের দেখতেই রাস্তার দুপাশে রীতিমতো লাইন পড়ে যায়।

Advertisement

[গৃহবধূর রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তমলুকে, খুনের অভিযোগ পরিবারের]

জানা গিয়েছে, বামদেবের কালীপুজো এবার ৩৮ বছরে পড়ল। পুজোর বাজেট প্রায় ছ’লক্ষ টাকা। যার একটা বড় অংশ শুধু বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেই খরচ হয়।এবারও  তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিরঞ্জনে গানবাজনার যাতে অভাব না ঘটে, সেজন্য কলকাতা ও খড়গপুর থেকে ব্যান্ডের লোকজন আনা হয়েছিল। গানের তালে তালেই ক্লাবের সদস্যরা নিজস্ব ছন্দে সেজে শোভাযাত্রায় শামিল হলেন। তবে এই শোভাযাত্রায় এবার একটু ভিন্নতা আনার চেষ্টা হয়েছে। বয়সের নিরিখে ক্লাবের সদস্যদের দুটি দলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বড়দের দলে মোট ১১ জন ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকেই রংবেরঙের পাঞ্জাবির সঙ্গে মাথায় বাঁধেন পাগড়ি। শোভাযাত্রায় বেরিয়ে এঁদের প্রত্যেকের মুখে ছিল জয় শ্রীরাম ধ্বনি। অন্যদিকে ছোটদের দলে সাত থেকে ২৫ বছরের যুবকরা ছিলেন। এদের পরনে ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবীর সঙ্গে ছিল খান পোশাকও। তবে চোখ টেনেছে চুলের স্টাইল। চুল এমন করে ছাঁটা, যেন মনে হবে মাথায় আনারস বসানো আছে। কারও চুলে স্পাইক করা। কেউ আগুন রঙে চুল রাঙিয়েছে। আনারস ছাঁটের চুলের জন্য শনিবার গোটা রাতই সেলুনে কাটিয়েছেন অজয় হাজরা। চুল কাটতে চারঘণ্টা সময় লেগেছে। তারপর তো সেটিংয়ের ব্যাপার ছিল। হানি সিংয়ের চুলের স্টাইলে এদিনের শোভাযাত্রায় হাঁটল স্কুল পড়ুয়া চিন্টু, লাকি হাজরা। এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে গত ১৫দিন ধরে তারা চুলের যত্ন নিয়েছে। শোভাযাত্রায় হাঁটতে গোটা মাথাটাই সজারুর কাঁটার স্টাইলে সেট করেছে রহিম হাজরা। হলিউডের নায়কদের মতো চুল কেটেছে শুভদীপ তুরি। পোশাকের বৈচিত্রের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে কেউ সাদা প্যান্ট জামার সঙ্গে লাল রঙের টাই ও জুতো পরে শোভাযাত্রায় হেঁটেছে। কারও পরনে ছিল সবুজ প্যান্টের সঙ্গে লাল গেঞ্জি। সব মিলিয়ে একেবারে হইহই রইরই ব্যাপার।

Advertisement

ক্লাব লাগোয়া এলাকার সেলুন কর্মীরা জানান, এই চুলের স্টাইলের জন্য গত দুদিন ধরে প্রায় সারারাত তাঁদের দোকান খুলে রাখতে  হয়েছে। তবে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরে বিদেশি পাড়ায় একই চিত্র দেখা যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সারা বছর পাড়ার ছেলেরা যেখানেই থাকুক না কেন, কালীপুজোর বিসর্জনের আগে ঠিক বাড়ি ফিরবে। নিজের পাড়ায় এই ফ্যাশন শো করার সুযোগ কেউই মিস করতে চায় না।

[পণের দাবিতে বধূকে খুনের অভিযোগ বাগদায়, গ্রেপ্তার শাশুড়ি]

ছবি: বাসুদেব ঘোষ

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ