Advertisement
Advertisement

Breaking News

কালো-সাদার খেলায় ৭ বছরের জেল, সতর্কবার্তা আয়কর দফতরের

পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ৭০ জন অভিজ্ঞ আধিকারিকের ৩০টি দল৷

Illegal cash deposit can land you in jail for 7 years, says IT
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 21, 2016 8:54 am
  • Updated:November 21, 2016 8:54 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে পুরনো নোটের বেহিসাবি টাকা জমার ক্ষেত্রে ফের সতর্কবার্তা আয়কর দফতরের৷ ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের পর বহু লোক কালো টাকা সাদা করতে অন্যের অ্যাকাউণ্ট ব্যবহার করছে বলে আয়কর দফতরের কাছে খবর৷ এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার অ্যাকউণ্টগুলিকেই লক্ষ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ এই প্রবণতা রুখতে আয়কর দফতর কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এমন ক্ষেত্রে নতুনভাবে কার্যকর হওয়া ‘বেনামি ট্রানজাকশন অ্যাক্ট’ প্রয়োগ করা হবে৷ এই আইন অনুযায়ী, অভিযোগ প্রমাণে জরিমানা তো হবেই, এমনকী মামলা ও সাত বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে৷

অন্যদিকে, নোট বাতিলের বাস্তব পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন দফতরের উচ্চপদস্থ আমলাদের রাজ্যে রাজ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সেই মতো ৭০ জন সদস্যের ৩০টি দল গঠন করা হয়েছে৷

Advertisement

সূত্রের খবর, ৮ নভেম্বরের পর থেকে ৮০টি সমীক্ষা ও ৩০টি তল্লাশি অভিযানের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকার গোপন আয়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে৷ এই সময়ের মধ্যে দফতর পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ৫০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে৷ তল্লাশি চলেছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে৷ ৮ নভেম্বরের পর বিশাল অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে, এমন অ্যাকাউণ্টগুলিকে চিহ্নিত করতে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা অভিযান চালাচ্ছেন৷

Advertisement

উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর কার্যকর হয়েছে বেনামি প্রপার্টি ট্রানজাকশন অ্যাক্ট, ১৯৮৮৷ এই আইন অবৈধ স্থাবর ও অস্থাবর উভয় সম্পত্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য৷ পুরনো নোটে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমার ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম, বেআইনি বা অবৈধ কোনও সূত্র মিললে সেক্ষেত্রে এই আইনই প্রয়োগ করবে আয়কর দফতর৷ আয়কর দফতরের এক কর্তা বলেন, যিনি বেহিসাবি টাকা অন্যের অ্যাকউণ্টে জমা করছেন এবং যিনি নিজের অ্যাকাউণ্ট ব্যবহার করে কারও কালো টাকা সাদা করে দিয়ে অপরাধে সাহায্য করছেন, উভয়ের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নিতে এই আইনে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আয়কর দফতরকে৷

সিবিডিটি এই ধরনের লেনদেনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখার জন্য আয়কর দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে৷ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু এই ধরনের ঘটনা ধরতে পেরেছে দফতর৷ বেনামি ট্রানজাকশন অ্যাক্টে জমা টাকার ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিসও পাঠানো হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে নজর রাখা হচ্ছে সেইসব অ্যাকাউণ্টগুলিতে, যেখানে ৮ নভেম্বরের পর সরকার নির্দিষ্ট করে দেওয়া ঊর্ধ্বসীমা ২.৫ লক্ষের বেশি টাকা জমা পড়েছে৷ তবে যদি ব্যাঙ্ক বা অর্থনৈতিক তদন্ত সংস্থা কোনও অ্যাকাউণ্টে আচমকা অস্বাভাবিক অঙ্কের, অর্থাৎ গ্রাহকের বিগত সময়ের লেনদেনের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন নগদ অর্থ পুরনো নোটে জমা পড়ে, তবে সেক্ষেত্রেও কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠাবে আয়কর দফতর৷

এদিকে, নোট বাতিলের প্রভাব সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দেশের বিভিন্ন অংশে যাবেন কেন্দ্রীয় সরকারের উচচপদস্থ আমলারা৷ তাঁরা সেই রিপোর্ট জমা দেবেন অর্থমন্ত্রকে৷ অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব স্তরের ৭০ জন অভিজ্ঞ আধিকারিকের ৩০টি দল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতর৷ তিন সদস্যের একেকটি দল যাবে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, রাজস্হান, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, হিমাচল প্রদেশ, ওড়িশা, তামিলনাডু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবে৷

অন্যদিকে, তেলেঙ্গানা, কেরল, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, গোয়া ও অসমের মতো রাজ্যগুলিতে যাবে দুই সদস্যের দল৷ নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মণিপুর, আন্দামান ও নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ, পুদুচেরি ও সিকিমে যাবে এক সদস্যের দল৷ আধিকারিকরা কবে রাজ্য সফরে যাবেন এবং কতদিন থাকবেন, তা ঠিক করবেন অর্থনৈতিক বিষয়ক দফতর৷

নোট বাতিলের প্রভাবে ব্যাঙ্কের ঘরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসায় সুদের হার কমতে পারে বলে আশা দিয়েছে দেশের বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)৷ রবিবার ব্যাঙ্কের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, সরকারের নোট বাতিলের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অভিনন্দনযোগ্য৷ ব্যাঙ্কের সেভিংস এবং কারেণ্ট অ্যাকাউণ্টে প্রচুর টাকা জমা হয়েছে৷ এর ফলে সুদের হার কমানো সম্ভব হবে৷

উল্লেখ্য, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এসবিআইতে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা জমা পড়েছে৷ এসবিআইয়ের আশা, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে নভেম্বরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের নিচে নেমে যেতে পারে৷ অক্টোবরে, খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪.২০ শতাংশ এবং পাইকারিতে মুদ্রাস্ফীতি ৩.৩৯ শতাংশে নেমে এসেছিল৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ