Advertisement
Advertisement

Breaking News

উঁচু জাতের মেয়েকে বিয়ে, জাতপাতের টানাটানিতে সবংয়ে একঘরে পরিবার

থানা, সাংসদের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা মেলেনি৷

In Khragpur family ostracized for upper caste marriage
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 16, 2017 6:41 am
  • Updated:September 19, 2019 12:50 pm

অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: অনার কিলিংয়ের মতো হাতে না মেরে ভাতে মারার পন্থা। সবংয়ে ফিরে এল গ্রামের সেই মোড়ল প্রথা। জাতপাতের শিকার হয়ে একটি পরিবার প্রায় আট মাস ধরে সামাজিক ও মানসিকভাবে বয়কটের শিকার। অভিযোগ জানে প্রশাসনও, তবু সবাই চুপ।

[শিখরে বাংলা, প্রথম বাঙালি হিসাবে সাতটি শৃঙ্গ জয় সত্যরূপ সিদ্ধান্তর]

Advertisement

সবং থানার ডাঁডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদকুরি গ্রামের কৃষ্ণপ্রসাদ ঘোড়ইয়ের পরিবার অপেক্ষায় আছে, কবে সবাই আবার কথা বলবে, উঠোনে এসে গল্প করবে পাড়ার লোকেরা। কি অপরাধ ছিল ওই পরিবারের? পরিবারের ছোট ছেলে এই গ্রামের তথাকথিত এক উঁচু পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেছে৷ আর সেখানেই বেজায় চটেছেন সমাজের তথাকথিত ধ্বজাধারীরা। সামাজিক বয়কটের ফলে এখন এই পরিবার চরম আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে৷ কী করবেন কিছু ভেবে পাচ্ছেন না কার্যত পঙ্গু কৃষ্ণবাবু৷ তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনাটি নিয়ে তিনি থানারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। তিনি ছুটে গিয়েছেন সাংসদ মানস ভুঁইয়ার কাছেও৷ উপকার হয়নি৷ ফলে একদিকে যেমন তিনি ও তাঁর পরিবার হতাশ, তেমনই দিশাহীন। অভিযোগ, বয়কট এমন পর্যায়ে গিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া সুপার মার্কেটের একটি স্টলও তাঁর বেদখল হয়ে গিয়েছে৷

Advertisement

[ডেঙ্গির চিকিৎসায় ১৭০০% বেশি বিল ফর্টিসের, মানল কেন্দ্রীয় সংস্থা]

ছোট ছেলে মধূসুদন ঘোড়ইয়ের সঙ্গে প্রনয়ঘটিত সম্পর্ক তৈরি হয় গ্রামেরই মেয়ে রনিতা মাসান্তের৷ দু’জনেই জানতেন, রনিতার বাবা সূর্যকান্তর তেজ। গ্রামে একেবারে হর্তাকর্তা। তবু তারা একপ্রকার জোর করেই বিয়ে করেন। আর সেই গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সামাজিক ও মানসিক নির্যাতন। বয়কট। অভিযোগ, সূর্যকান্তর এমনই প্রভাব গ্রামের লোকজন তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ধরেন না। এই মুহূর্তে রনিতা অন্তসত্ত্বা৷ আর তাঁর স্বামী মধূসুদন কাজের সূত্রে এখন গুজরাটের সুরাটে রয়েছেন৷ রনিতাদেবী বলেন, “এখনকার এই আধুনিক যুগে জাতপাত একেবারে অচল৷ আর সেই অচল জাতপাতের দোহাই দিয়ে শ্বশুরবাড়ির পরিবারকে একঘরে রাখা হয়েছে।” তবে কারা এর পিছনে রয়েছে সেই ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন৷ তবে তাঁর বাবা একবার গ্রামবাসীদের কাছে তাঁর মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন৷ তা নিয়ে সালিশি সভাও হয়। তারপর থেকেই এই সামাজিক বয়কট।

পরিবারের কর্তা কৃষ্ণবাবু বলেছেন, তিনি থানা থেকে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া পর্যন্ত গিয়েছিলেন৷ কিন্তু নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে৷ যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এরকম কোনও অভিযোগ তাদের জানা নেই৷ ডাঁডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মাধব পাত্র গোটা ঘটনাকে অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন৷ তবে এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত কার্যালয়ে এই অভিযোগের কোনও লিখিত কিছু না আসায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন৷ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন কৃষ্ণপ্রসাদবাবুর স্টল ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের৷ একটু সময় লাগলেও ফিরিয়ে দেওয়া হবে৷ কিংবা বিকল্প একটি স্টলের ব্যবস্হা করে দেওয়া হবে৷ আর রাজ্যসভার সদস্য মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ওই গ্রামের কিছু লোক অন্যায় করছেন৷ বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷ অপরদিকে খড়গপুর মহকুমা শাসক সুদীপ সরকার জানিয়েছেন এরকম ঘটনার কথা জানা নেই৷ কোনও অভিযোগ এলে নিশ্চিতভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে৷

ছবি: সৈকত সাঁতরা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ