ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: তিনটি খুনের ক্ষত মুছে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে বসিরহাট। শনিবার রাতে সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে তিন জন খুন হয়েছেন। এক যুবক নিখোঁজ। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন অনেকে। এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক চাপানউতোরও। গোটা মহকুমার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। মঙ্গলবার থেকে ওই এলাকায় ফের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করে দেওয়া হল। কিন্তু চার দিন পরও কোনও হদিশ মিলল না নিখোঁজ যুবক দেবদাস মণ্ডলের।
ভাঙ্গিপাড়ায় হাঙ্গামার সময় বিজেপি কর্মী প্রদীপ ও সুকান্ত মণ্ডলের সঙ্গে দেবদাসের উপরও চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। শেষবার তাঁকে ভেড়ির আল দিয়ে পালাতে দেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। পিছনে বন্দুক হাতে তাঁকে ধাওয়া করছিল দুষ্কৃতীরা। ছেলে যে ওই দুষ্কৃীতাদের হাত থেকে রেহাই পাননি তা মেনেই নিয়েছেন ওই যুবকের মা। কিন্তু মৃতু্য হলেও তাঁকে শেষবারের জন্য দেখতে চান বৃদ্ধা আশারানি মণ্ডল। পুলিশের কাছে তাই তাঁর একটাই আরজি, “ওঁ বেঁচে নেই জানি, কিন্তু ছেলের দেহটা অন্তত ফিরিয়ে দিন।”
একদিকে দেবদাসেরও যেমন কোনও হদিশ মেলেনি, তেমনই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির বিষয়েও পুলিশের তরফে বিশেষ কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি বলে দাবি নিহতদের পরিবারের। সোমবার মৃত বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী সন্দেশখালি ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শেখ শাজাহান-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সেই ২৫ জনের মধ্যে একজনকেও পুলিশ পাকড়াও করেনি। অন্যদিকে এই ঘটনায় খুন হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মীও। তাঁর পরিবারের তরফে বিজেপির ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বুধবার রাত পর্যন্ত সেই মামলাতেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, সন্দেশখালির উত্তাপ কিছুটা কমছে ঠিকই। পুলিশ এই মামলায় দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার ফের এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। এদিন তিনি সন্দেশখালির ডাঙিপাড়ায় নিহত দুই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে যান।