ইসমাইলকে ঘিরে উচ্ছ্বাস পরিবারের। নিজস্ব চিত্র
রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাগজকলমে যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তিনিই শশরীরে হাজির। প্রথমে ভূত দেখার মতো চমকে উঠেছিলেন বাড়ির লোকজনরা। পরে সম্বিত ফিরতে চোখ থেকে দু’গাল বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা। ১৮ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি ফিরে আসতেই ওই পরিবার ও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে যায়। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির এক নম্বর ওয়ার্ডের ছোট দারুয়া এলাকার।
জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে গিয়েছিলেন ইসমাইল আলি খান ওরফে খোকন। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। মধ্যে ১৮ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। পরিবার তাঁর কোনও খোঁজ পায়নি এই মাঝের সময়ে। নিখোঁজ হওয়ার ১০ বছর পর ইসমাইলের মৃত্যু হয়েছে ধরে নিয়ে, সরকারি ডেথ সার্টিফিকেট পেয়ে যায় ওই পরিবার। শুক্রবার রাতে নিজের বাড়িতে হাজির হন ইসমাইল আলি খান।
বাড়ির লোকজনরা তাঁকে ফিরে পেয়ে আত্মহারা। আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও তাঁকে দেখতে ভিড় করেছিলেন রাত থেকেই। ইসমাইলকে নিয়ে হাজির হয়েছেন মুম্বইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। জানা গিয়েছে, একসময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন ওই যুবক। মুম্বইয়ের একটি সরকারি হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করতেন তিনি। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে মুম্বইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁর চিকিৎসা চলে। তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্মৃতি ফিরতেই তিনি বাড়ি ফেরার জন্য আকুল হয়ে পড়েন।
তাঁর কাছ থেকে সমস্ত ঠিকানা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সংস্থা। এরপরেই শুক্রবার রাতে ইসমাইলকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আগামী দুবছর ওই সংস্থাই তাঁর চিকিৎসা চালাবে। নিখোঁজ থানার সময়ে ইসমাইলের বয়স ছিল ৩২ বছর। এখন তিনি ৫০-এর ঘরে। সময়ের সঙ্গে তাঁর চেহারাতেও কিছু বদল এসেছে। ঘরের ছেলে ফিরে আসায় খুশি পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.