Advertisement
Advertisement

পিঠোপিঠি দুই মেয়ে, ঠোঁট চেরা সদ্যোজাতকে গঙ্গায় ভাসাল বাবা-মা

তদন্ত শুরু পুলিশের৷

Katwa: Couple thrashed for trying to dump baby girl
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:October 27, 2018 6:03 pm
  • Updated:October 27, 2018 6:27 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: জন্মের পর সন্তানের মুখ দেখে কেঁদে উঠেছিলেন মা৷ ভেবেছিলেন, পুত্র সন্তানের জন্ম হবে৷ কিন্তু, চোখ মেলতেই ভেস্তে যায় সমস্ত স্বপ্ন৷ মুখে গন্নাকাটা দাগ থাকা অবস্থায় কন্যা সন্তানকে দেখে মাথায় বাজ পড়ে গৃহবধূর৷ ভেঙে পড়েন ওই বছর ২৩-এর ওই গৃহবধূ৷ বিষয়টি অনুমান করে নার্সরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, হাসপাতালের বেডে শুয়েই অন্য অঙ্ক কষতে শুরু করেন কাটোয়ার মুস্তাপুর গ্রামের ওই গৃহবধূ পারমিতা হালদার৷  

[মাত্র ১২ বছরেই মাধ্যমিকে বসছে আমতার ‘বিস্ময় বালিকা’ সইফা]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও পারমিতার একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এবারেও আরও একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি৷ তার ওপর গন্নাকাটা। অস্বাভাবিক মুখের কন্যাশিশুকে ছ’দিনের মাথায় গঙ্গায় ভাসিয়ে দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন মা-বাবা ও দাদু-দিদিমা। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কাটোয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় হরিসভাঘাটের কাছে কাঁথায় মুড়ে ছ’দিনের শিশুটিকে ভাসিয়ে দেওয়ার সময় চোখে পড়ে যায় স্থানীয়দের। পরে, স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন৷ পাশাপাশি স্থানীয় জনতা আটক করে ফেলে শিশুটির মা পারমিতাদেবী, বাবা শান্ত হালদার, পারমিতাদেবীর বাবা মা বিশ্বনাথ ও সরস্বতী হালদারকেও। একটি স্কুল ঘরে চারজনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কাটোয়া থানার পুলিশ পৌঁছে চারজনকে উদ্ধার করে আটক করে। সদ্যজাতকে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। যদিও পুলিশ জানিয়েছে এদিন বিকেল পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে কেন শিশুকন্যাটিকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

[কুশমণ্ডির বিখ্যাত মুখোশ শিল্পকে বিদেশের বাজারে বিক্রির উদ্যোগ]

কাটোয়ার সুদপুর পঞ্চায়েত এলাকার মুস্তাপুর গ্রামের বাসিন্দা পারমিতাদেবীর স্বামী শান্ত হালদার পেশায় রংমিস্ত্রি। বাপেরবাড়িও একই গ্রামে। প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে তাদের দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল। পারমিতাদেবীর আড়াই বছরের একটি কন্যা রয়েছে। তার নাম দিয়া। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার প্রসব বেদনা নিয়ে পারমিতা হালদার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। ওদিন রাতেই অস্ত্রপচার করে একটি কন্যার জন্ম দেন তিনি। তবে শিশুটি ঠোট, তালু ও নাকের কাছে কাটা নিয়ে জন্ম নেয়। যাকে চলতি কথায় গন্নাকাটা বলে। জানা গিয়েছে, শনিবার পারমিতাদেবীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে নিতে এসেছিলেন স্বামী, বাবা ও মা। এদিনের এই ঘটনা প্রসঙ্গে পারমিতাদেবীর স্বামী শান্ত হালদারের অবশ্য দাবি, ‘‘মেয়ের এমন অবস্থা দেখে মাথার ঠিক না রাখতে পেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷’’ এদিন পারমিতা হালদার বলেন, ‘‘একেই মেয়ে হয়েছে। তার ওপর স্বাভাবিক না হওয়ায় আমরা ভাবি ওর বেঁচে থেকে কোনও লাভ নেই। তাই ওই কাজ করতে গিয়েছিলাম।”

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement