বাবুল হক, মালদহ: অপহরণ করে গণধর্ষণ। তারপর ধরাও পড়ে যায় অভিযুক্ত। নাবালক, এই যুক্তিকে পুলিশ ধৃতকে ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর ফের দুষ্কর্ম। এবার ঝুঁকি না নিয়ে নাবালিকাকে গায়েব করে দিল অভিযুক্তরা। মালদহের রতুয়ার এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ নির্যাতিতার পরিবার। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
[চুম্বনের আয়োজন, দুই বিধায়ককে সাসপেন্ড করার দাবি বিজেপির]
একবার নয় দুবার অপহরণ। প্রথমবার গণধর্ষণ, পরের বার কত অপমান মেয়ের উপর চলেছে তা জানে না হতভাগ্য পরিবার। চার মাস পেরিয়ে গেলেও গণধর্ষিণের শিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর খোঁজ নেই। এফআইআর করার পর থেকে উলটে অভিযুক্তদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবারটিকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও পুলিশ কার্যত চোখ বুঝে রয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী পুলিশ সহমর্মিতার বদলে দুর্ব্যবহার করে বলে জানায় নির্যাতিতার পরিবার। তদন্ত চলছে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন জেলার পুলিশ কর্তারা।
[ভাঙনের মুখে সুপারস্টার শাকিব-অপুর বিয়ে, ঠেকাতে কারা উদ্যোগী হল জানেন?]
অভিযুক্তদের নাম সফিকুল রায় ওরফে জাকির, শেখ লদা ও শেখ সাকিব। এরা রতুয়ায় দুষ্কৃতী হিসাবে পরিচিত। নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য চলতি বছরের ৯ জুলাই মেয়ে প্রথমবার লাঞ্ছনার শিকার হয়। ওই তিনজন মেয়েকে অপহরণের পর তিন দিন ধরে একটি ঘরে আটকে রেখে গণধর্ষণ করে। এরপর দুষ্কৃতীরা নির্যাতিতাকে বিহার পাচারের ছক কষেছিল। গত ১১ জুলাই নদীপথে বিহারে যাওয়ার জন্য দুষ্কৃতীরা স্থানীয় গোবরাঘাটে অসুস্থ অবস্থায় এই ছাত্রীকে নিয়ে আসলে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। দুষ্কৃতীদের আটক করে খবর দেওয়া হয় রতুয়া থানায়। ওই অবস্থায় ছাত্রীকে ফেলে দুই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। পুলিশ ছাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর ছাত্রীর পরিবার গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে রতুয়া থানায়।
[বাড়িতে শৌচালয় থাকলে মিলবে মার্কশিট, নির্দেশিকা স্কুলের]
নির্যাতিতার পরিবার সফিকুল রায় ওরফে জাকির রায়কে ধরে পুলিশের হাতে তুলেও দিয়েছিল। কিন্ত পুলিশের রিপোর্টে অভিযুক্তকে নাবালক উল্লেখ করা হয়। ফলে মুক্ত হয়ে যায় সফিকুল। গণধর্ষিতার পরিবার বিচারের আরজি চেয়ে আদালতে দারস্থ হয়। এর কয়েক দিন পর গত আট জুলাই স্কুল থেকে ফেরার পথে গণধর্ষিতাকে ফের অপহরণ করে অভিযুক্তরা। ফের রতুয়া থানায় অভিযোগ করে পরিবার। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি রতুয়া হাইমাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী। এবার বিচার চাইতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন এই পরিবার।
মালদহের ঘটনায় ক্ষুব্ধ সমাজকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, অপরাধীরা সংগঠিতভাবে এই কাজ করেছে। এটি কোনও তাৎক্ষণিক বিষয় নয়। এরা একবার ছাড়া পেলে নতুন কোনও অপরাধে যুক্ত হয়ে যাবে। এই সমস্ত দুষ্কৃতীদের সফট টার্গেট নাবালিকারা। পুলিশের নতুন করে তদন্ত শুরু করা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.