Advertisement
Advertisement

Breaking News

Medinipur

দিলীপ গড়ে অগ্নির পরীক্ষা কঠিন করেছেন জুন! ‘লালদুর্গ’ মেদিনীপুরে ফুটবে জোড়াফুল?

কে শেষ হাসি হাসবেন, তা এখনই বলা বেশ কঠিন।

Lok Sabha Election 2024: In depth analysis of Medinipur constituency
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 8, 2024 10:03 pm
  • Updated:April 9, 2024 10:48 am

সম্যক খান, মেদিনীপুর: প্রায় ১৫ লক্ষ ভোটার থাকা মেদিনীপুরের বেশিরভাগ মানুষই কৃষিনির্ভর। কৃষিজমির পাশাপাশি রয়েছে আইআইটি খড়গপুরের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নতুন করে গড়ে উঠছে শিল্পতালুক। খড়গপুরে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের বাস। দক্ষিণের একাধিক রাজ্য়ের মানুষ এই এলাকায় আস্তানা গেড়েছে। ফলে এই এলাকা
এছাড়া আছে ভারতীয় বায়ুসেনার কলাইকুন্ডা এয়ারবেস। খড়গপুরে রয়েছে প্রচুর রেল কলোনি। সেখানে অন্যতম ইস্যু অনুন্নয়ন। তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, গ্রামের সাধারণ মানুষের মন যে দলের প্রার্থী জয় করতে পারবেন তিনিই শেষ হাসি হাসবেন এই মেদিনীপুরে।

[আরও পড়ুন: তৃণমূল নয়, বাংলায় ১ নং বিজেপি! লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ভবিষ্যদ্বাণী প্রশান্ত কিশোরের]

লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভা

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬টি ও পূর্ব মেদিনীপুরের একটি বিধানসভা নিয়ে ১৯৫২ সালে গঠিত হয় এই লোকসভা কেন্দ্র। রয়েছে-

Advertisement
  • এগরা (পূর্ব মেদিনীপুর)
  • দাঁতন
  • কেশিয়ারি
  • খড়গপুর সদর
  • নারায়ণগড়
  • খড়গপুর
  • মেদিনীপুর

জনবিন্যাস

মোট ভোটার প্রায় ১৫ লক্ষ। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার। ৩০-৩৫ রয়েছে আদিবাসী, তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতির ভোটার। অর্থাৎ এই কেন্দ্রে ভোটের নির্ণায়ক হবে।

ইতিহাস

‘লালদুর্গ’ হিসেবেই পরিচিত ছিল মেদিনীপুর। সিপিআই-এর শক্তঘাঁটি ছিল এই এলাকা। তবে সাতের দশকের আগে এই কেন্দ্রের কংগ্রেসও রাজত্ব করেছে। ১৯৫২-র প্রথম নির্বাচনে গোটা দেশের মতোই এখানে জিতেছিল কংগ্রেস। ১৯৫৭-৬২, ১৯৬২-৬৭, ১৯৬৭-৬৯ কংগ্রেসেরই দখলে ছিল আসনটি। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। কিন্তু সে বছরের নির্বাচনে জনতা দল জয়লাভ করে। এর পর পালাবদল হয়ে এই কেন্দ্রে লালদুর্গ হয়ে ওঠে। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রটি ১৯৮০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সিপিআই-র দখলে ছিল। এই কেন্দ্র থেকেই নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত নারায়ণ চৌবে এবং প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের মতো প্রার্থীরা। ২০০৯ সালে যখন একের পর এক কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে যাচ্ছে তখন সিপিআই-র প্রবোধ পান্ডা মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে এই কেন্দ্রের সমীকরণ বদলে যায়। তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। ২০১৯ সালে মেদিনীপুর থেকে জয়ী হন দিলীপ ঘোষ।

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের পর সিপিএম, ভোটের আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ফ্রিজ আয়কর দপ্তরের]

গত এক দশকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি

বামেদের রমরমার মাঝেও মেদিনীপুরে ধীরে ধীরে নিজেদের সংগঠন গুছিয়েছে গেরুয়া শিবির। যার ফল মিলেছিল ২০১৬ সালে। তৃণমূলের জোরালো হাওয়ার মাঝেও সেই বিধানসভা ভোটে খড়গপুর শহর থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তাও আবার কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের বিধায়ক ‘চাচা’ জ্ঞানসিংহ সোহন পালকে হারিয়ে। তার পর থেকে মাটি কামড়ে সেখানেই পড়ে থেকেছেন তিনি। তৈরি করেছেন সংগঠন। ফল মিলেছে ২০১৯ সালে। মেদিনীপুর থেকেই সাংসদ হন দিলীপ ঘোষ। তবে একুশের বিধানসভায় বিজেপির সেই ক্যারিশমা চোখে পড়েনি। একমাত্র খড়গপুর গ্রামীণ ছাড়া সাত বিধানসভার অন্য কোনও বিধানসভায় পদ্ম ফোটাতে পারেনি বিজেপি। এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে একমাত্র বিজেপি বিধায়ক অভিনেতা হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়। যিনি এবার ঘাটাল থেকে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী তথা দুবারের সাংসদ দেবের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শুধু একুশের বিধানসভা নয়, হালফিলের পঞ্চায়েত বা পুর ভোটেও বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারেনি। পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসন দখল করলেও বোর্ড গঠন করতে পারেনি। এলাকায় দাপট ছিল দিলীপ ঘোষের। কিন্তু তাঁকে এবার সরিয়ে বর্ধমান দুর্গাপুরে প্রার্থী করেছে দল। অন্যদিকে তৃণমূলের অন্দরেও ক্রমশ প্রকট হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

প্রার্থী পরিচয়

এবার দিলীপের গড় মেদিনীপুরের বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন অগ্নিমিত্রা পল। তিনি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক। এবার গড় পরিবর্তন করে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী জুন মালিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এখানে বাম প্রার্থী হয়েছে সিপিআই-এর বিপ্লব ভট্ট।

সম্ভাবনা

দিলীপ ঘোষকে এই কেন্দ্র থেকে সরিয়ে জুন মালিয়ার জয়ের রাস্তা বিজেপি অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। এবারের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা জনসংযোগের দিক থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বীর দিক থেকে পিছিয়ে। কারণ, অভিনেত্রী জুন যেন মেদিনীপুরের ঘরের মেয়ে। সহজেই মিশে যান সকলের সঙ্গে। অন্যদিকে অগ্নিমিত্রার এই সহজাত ক্ষমতাটা অনেকটা কম। প্রার্থী নিয়েও গেরুয়া শিবিরের অন্দরে দ্বন্দ্ব রয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের অন্দরেও গোষ্ঠীকোন্দল কম নেই। ফলে কে শেষ হাসি হাসবেন, তা এখনই বলা বেশ কঠিন। প্রচারের ঝড় তোলার উপর হারজিতের অঙ্ক নির্ভর করছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ