Advertisement
Advertisement
Bimal Gurung

ভোটের লাইনে পাহাড়বাসী, বিজেপি-বন্ধু গুরুংয়ের রাজনৈতিক জীবনের বড় ফয়সালা

ভোট কাটাকুটির অঙ্কে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা প্রমাণ করতে না পারলে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হতে পারে 'বিদ্রোহী' বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকেও।

Lok Sabha Election 2024: Political career of Bimal Gurung will be decided on second phase election in Darjeeling

ফাইল ছবি।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 25, 2024 9:48 pm
  • Updated:April 26, 2024 3:38 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে চলেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং এবং বিজেপির বিদ্রোহী বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। পাহাড়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরার পরও গুরুং কি দার্জিলিং লোকসভা আসনে ‘কিং মেকার’-এর ক্যারিশমা নিয়ে বহাল তবিয়তে? নাকি এই নির্বাচন গুরুংয়ের রাজনৈতিক অস্তিত্বে বিরাট প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিতে চলেছে? অন্যদিকে, বিষ্ণুপ্রসাদ কি পারবেন বিজেপি প্রার্থীকে বিপাকে ফেলতে? নাকি জামানত রক্ষায় তার হাসফাঁস দশা হবে? তিনিও হারিয়ে যেতে চলেছেন? শুক্রবার আরও অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে চলেছেন পাহাড়ের জনতা।

এক সময় পাহাড়ের শেষ কথা ছিলেন সুবাদ ঘিসিং। ২০০৭ সালে সেই ঘিসিংকে নির্বাসনে পাঠিয়ে উত্থান বিমল গুরুংয়ের (Biman Gurung)। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্বে ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে রক্তক্ষয়ী হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হয়। এর পর ভোটের রাজনীতিতে ওই দাবি হয়ে ওঠে ‘তুরুপের তাস’। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০০৯ নির্বাচনে গুরুংয়ের হাত ধরে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে (Darjeeling Lok Sabha Constituency) গেরুয়া শিবিরের যে উত্থান ঘটে তার পিছনে ছিল জাতিসত্তার আবেগ। সেই আবেগ পুঁজি করে এরপর ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র গেরুয়া শিবিরকে উপহার দিয়ে গুরুং হয়ে ওঠেন পাহাড়ের ‘কিং মেকার’। তাঁর আশীর্বাদ যার মাথায়, সে-ই পাহাড়ে জিতবে এমন মিথ গড়ে ওঠে।

Advertisement
Bimal Gurung wants permanent solution of Gorkhaland issue
পাহাড়ের একসময়ের বেতাজ বাদশা বিমল গুরুং। ফাইল ছবি।

কিন্তু সেই পরিস্থিতি খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পাহাড়ে ১০৪ দিনের ধর্মঘট, ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের পরিণতিতে বিমল গুরুংয়ের আত্মগোপনের পর অনীত থাপার উত্থানের হাত ধরে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ ফের পাল্টাতে শুরু করে।

Advertisement

তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অনীতের দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (BGPM) জিটিএ, পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতে একচ্ছত্র আধিপত্য বাড়াতে বিজেপি তো বটেই। সহযোগী জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টির কোণঠাসা দশা হয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। এখন দেখার আজ, পাহাড়ে শেষ খেলা কোন দল খেলছে।

[আরও পড়ুন: শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় ৮৯ আসনে ভোট, ভাগ্য পরীক্ষা রাহুল-সহ একাধিক হেভিওয়েটের]

দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলে বরাবর নির্ণায়ক শক্তি হয়েছে পাহাড়ের ভোট। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ‘লিড’ নিয়ে সমতলে নেমে প্রার্থীকে আর ভাবতে হয়নি। ২০০৯ থেকে ২০১৯ এটাই ছিল দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের সমীকরণ। কিন্তু তিনবারের ভোটের ফয়সালা পাহাড়ের তথাকথিত বেতাজ বাদশার নির্দেশে হলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। জিটিএ, পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়বাসী ‘হুকুম’ উপেক্ষা করে যে ভোট দিয়েছে তার ফলাফল গুরুংয়ের পক্ষে মোটেও স্বস্তিদায়ক ছিল না। তার জনপ্রিয়তায় ভাটার টান স্পষ্ট হয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীর দাবি উপেক্ষা করে সেই রাজু বিস্তায় ভরসা রেখে এবার পারবেন কি গুরুং আগের তিনবারের মতো ম্যাজিক দেখাতে?

[আরও পড়ুন: নাড্ডাকে লোকসভা পর্যন্ত বাংলার বকেয়া আটকে রাখার আর্জি! ভাইরাল সুকান্তর মেসেজ]

প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate) গোপাল লামা যে এক ইঞ্চি জমি বিনা যুদ্ধে ছাড়তে রাজি নয় সেটা পাহাড়-সমতলে সমানতালে প্রচার চালিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তার উপর বিষফোঁড়া হয়েছেন কার্শিয়াংয়ের বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা (Bishnuprasad Sharma)। সবমিলিয়ে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে গুরুংয়ের রাজনৈতিক জীবনের বড় ফয়সালা করতে চলেছেন পাহাড়বাসী। বিজেপির জয়-পরাজয় তার অস্তিত্ব নির্ণয় করবে। শুধু তাই নয়। ভোট কাটাকুটির অঙ্কে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা প্রমাণ করতে না পারলে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হতে পারে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকেও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ