Advertisement
Advertisement

Breaking News

Namkhana

জীবনযুদ্ধে লড়াই, আড়াই ফুটের অশক্ত শরীরেই মাধ্যমিক দিচ্ছে নামখানার তমশ্রী

বাবা-মায়ের কোলে চেপে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে তমশ্রী।

Madhyamik candidate of Namkhana appearing exams despite illness

বাবা-মায়ের সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:February 16, 2025 8:40 pm
  • Updated:February 16, 2025 9:38 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শরীরজুড়ে প্রতিবন্ধকতা। ছোট থেকে হাঁটাচলা তো দূর। সোজা হয়ে ঠিকমতো দাঁড়াতেই পারত না সুন্দরবন পুলিশ জেলার নামখানার ফ্রেজারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের অমরাবতী গ্রামের বাসিন্দা বছর ষোলোর কিশোরী তমশ্রী মণ্ডল। বিছানায় শুয়ে শুয়েই চলত খাওয়াদাওয়া থেকে পড়াশোনা। সেই মেয়ে যে কোনওদিন কঠোর পরিশ্রম করে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে পারবে! তা হয়তো ভাবেননি তমশ্রীর বাবা-মা। কিন্তু, সমস্ত আশঙ্কা, প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে অবশেষে ম‌াধ‌্যমিকে বসেছে আড়াই ফুটের তমশ্রী। বাবা-মায়ের কোলে চেপে রোজই আসছে পরীক্ষা দিতে। তার একটাই লক্ষ‌্য, সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো।

ছোট থেকেই হাড়ের সমস্যা  দক্ষিণ ২৪ পরগনার  নারায়ণীতলা ধনেশ্বর শিক্ষা সদনের ছাত্রী তমশ্রীর। ক্যালসিয়ামের অভাবে শক্তপোক্ত নয় তার শরীরের হাড়। বাবা তরুণ মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মামণি মণ্ডল গৃহবধূ। এক বোন রয়েছে তমশ্রীর। মেয়ের কঠিন শারীরিক সমস্যার বিরুদ্ধে দিনের পর দিন লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তমশ্রীর বাবা-মা। মাঝেমধ্যে মেয়ের জন্য যন্ত্রণা অনুভব করলেও সামলে নিয়েছেন তাঁরা। মন শক্ত করে মেয়েকে বড় করে তোলার অদম্য প্রয়াস চালিয়েছেন।

Advertisement

মেয়ে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে নামখানার রাজনগর বিশ্বম্ভর হাইস্কুলে। প্রতিদিনই বাবা-মায়ের কোলে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসছে তমশ্রী। তার স্বপ্ন, সব বাধাকে উপেক্ষা করেই একদিন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজের জন্য কিছু করবে। সেজন্যই তার এই লড়াই। লড়াইয়ে সাহস জুগিয়ে সহযোগিতা করার জন্য মা-বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বন্ধু-বান্ধব সকলের কাছেই কৃতজ্ঞ সে।

শরীরের গঠন সেভাবে না হলেও মনের দিক থেকে দৃঢ় তমশ্রী। শান্ত স্বভাবের মেয়ে তমশ্রী পড়াশোনায় ভালো। ভালো ছবি আঁকতেও পারে সে। স্কুল থেকে তিন-তিনবার ব্লক স্তরে আঁকায় প্রথম হয়েছে। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন এই পরীক্ষার্থী কোনও রাইটার না নিয়েই প্রতিটি পরীক্ষা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। তাঁদের ইচ্ছে থাকলেও মেয়ের কথাতেই কোনও রাইটারের আবেদন জানানো হয়নি। বাংলা পরীক্ষার পর হাতে ও আঙুলে প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করলেও পিছপা হয়নি সে। ইংরাজি ও অঙ্ক পরীক্ষাও ভালো দিয়েছে। এমনই অদম্য এক মনের জেদে তমশ্রী এগিয়ে চলেছে জীবনের পথে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement