Advertisement
Advertisement

Breaking News

খণ্ডহর থেকে মডেল স্কুল, শিক্ষকের কৃতিত্বকে কুর্নিশ মালদহবাসীর

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।

Making school greener, Malda teacher’s unique initiative lauded
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 9, 2018 9:40 am
  • Updated:January 9, 2018 9:50 am

বাবুল হক, মালদহ: সবুজের সমারোহে পাখির কূজন। ফুলের বাগান। গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা সৌন্দর্যের মাঝে রকমারি সবজির বাগান। সেই পরিবেশে মানানসই ঔষধি গাছও। বিদ্যালয় ও পড়ুয়াদের সুরক্ষিত রাখার জন্য রয়েছে সীমানা ‌পাঁচিল। ৬টি পাকা শ্রেণিকক্ষ। প্রধান শিক্ষকের আলাদা ঘর। পানীয় জলের জন্য সাব মার্সিবলের ব্যবস্থা। শৌচাগার ঝকঝকে। রয়েছে সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য আলাদা একটি মঞ্চও। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ যেন এক টুকরো শান্তিনিকেতন! যার নেপথ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

[পুরুলিয়ায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, বন্যপ্রাণীদের উষ্ণ রাখতে চিড়িয়াখানায় ‘ডায়েট চেঞ্জ’]

Advertisement

MLD SCHOOL GARDEN

Advertisement

মালদহের বামনগোলার পাকুয়াহাট ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয় এজন্যই আলাদা। এক সময় এই স্কুলের পরিবেশ এতটাই খারাপ ছিল যে সেখানে ছেলেমেয়েদের পাঠাতে চাইতেন না অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের সেই দশা বদলে প্রকৃত শিক্ষাঙ্গণের পরিবেশ তৈরি করে নজির গড়েছেন প্রধান শিক্ষক। এই বছর মিলেছে শিশুমিত্র পুরস্কারও। জেলার প্রায় দু’হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে স্বাস্থ্যকর ও পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশের নিরিখে পাকুয়াহাটই যে সেরা, তা মানছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্তারাও। ১৯৯৯ সালে যে বিদ্যালয়ে ছিল একটি মাত্র টিনের চালা-‌ঘর, সেটিই এখন ছায়া সুশীতল শান্তির নীড়। তখন স্কুলের চারিদিক ছিল খোলা। গরু-ছাগল ঢুকে পড়ত। এলাকাবাসীরা যে যার মতো বিদ্যালয়ের জমি ব্যবহার করতেন। রোদে বিছানা-কাপড় মেলে রাখতেন স্কুল প্রাঙ্গণেই। পড়ুয়াদের শৌচাগার তো দূর অস্ত, ছিল না পানীয় জলের ব্যবস্থাও। একমাত্র টিউবওয়েলটিও কার্যত বিকল হয়ে পড়ে থাকত। এমনই করুণ অবস্থা ছিল পাকুয়াহাট ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

[সারবে পেটের রোগ, বিশ্বাসে বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণে মেলা ভিড়]

সে বছর পদোন্নতি নিয়ে বামনগোলা চক্রের অন্তর্গত মির্জাপুর গ্রামের এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন প্রদীপকুমার দাস। তারপরই শুরু হয় প্রদীপবাবুর কর্মযজ্ঞ। ধাপে ধাপে তৈরি করেন বিদ্যালয়ের যাবতীয় পরিকাঠামো।  সীমানা-‌প্রাচীরের ব্যবস্থা করেন। পাকা করা হয় ছ’টি শ্রেণিকক্ষ। একে একে তৈরি হয় প্রধান শিক্ষকের আলাদা ঘর, পাকা শৌচাগার, ফুলের বাগান, সবজি চাষ, ঔষধি গাছ। পানীয় জলের জন্য বসানো হয় সাব মার্সিবলের ব্যবস্থা। খোলনলচে বদলে যায় গোটা স্কুলের। বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য আলাদা একটি মঞ্চও গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। মঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছে। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৮। শিক্ষক ছ’জন।

[হরিশ্চন্দ্রপুরে এখনও পুকুর কাটছেন আড়াই বছর আগে মৃত ব্যক্তি!]

এত কিছুর পরও এখনও অনেক কাজ বাকি। আক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের। বিভিন্ন জায়গায় দরবার করে তিল তিল করে বিদ্যালয়টিকে নিজে হাতে সাজানোর চেষ্টা করেছেন। শুধুমাত্র একটাই কাজ করতে পারেননি তিনি। বিদ্যালয়ে বিদ্যুতের কোনও ব্যবস্থা নেই। গরমের সময় পড়ুয়াদের খুব সমস্যায় পড়তে হয়। দীর্ঘদিন আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য স্কুলের তরফে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মেলেনি বিদু্যৎ সংযোগ। প্রদীপবাবুর কথায়, “স্কুলটি আগে এলাকাবাসীদের অবহেলায় জায়গা ছিল। এখন তাঁরাই সহযোগিতার জন্য সবার আগে এগিয়ে আসেন।” মালদহ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি আশিস কুণ্ডু বলেন, “সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলেছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলটি এবার শিশুমিত্র পুরস্কারও পেয়েছে। বিদ্যুতের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ