বাবুল হক, মালদহ: গঙ্গায় কুমির! অবিশ্বাস্য ঠেকলেও এটাই বাস্তব। এবার কুমিরের দেখা মিলেছে ফরাক্কা সেতুর অদূরেই মালদহের বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার ভাঙ্গাপাড়ায়। কখনও জলে নেমে পড়ছে, আবার কখনও ডাঙ্গায় উঠে আসছে। গ্রামের পাশেই গঙ্গার তীরে কুমির ঘোরাঘুরি করায় আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে ভাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দাদের। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছ ধরার কাজও। জেলেরাও কুমিরের ভয়ে জলে নামছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুমিরের সেই ছবি প্রচার হয়ে যাওয়ায় নদীর পাড়ে উপচে পড়ছে কৌতূহলীদের ভিড়।
[ মোবাইল চুরির অপবাদ, শাশুড়ির নাকে সজোরে ঘুসি বউমার ]
মঙ্গলবার সকাল থেকেই কুমির দেখতে দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন ভাঙ্গাপাড়ায়। আর এতেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মালদহ জেলা বন দপ্তরের কর্তারা। মঙ্গলবার মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক কৌশিক সরকার বলেন, “যাঁরা কুমিরটির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, তাঁরা উচিত কাজ করেননি। এখন সেখানে ভিড় জমিয়ে মানুষ অহেতুক কুমিরটিকে উত্যক্ত করবেন। যাতে কুমিরটিকে উত্যক্ত কেউ না করেন, তা দেখতে পুলিশ ও পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে। নাহলে অঘটন যেমন ঘটবে, তেমনই কুমিরটিও শান্তিতে থাকতে পারবে না। বিরক্তবোধ করবে।”
[ নাবালিকা বিয়ে ভণ্ডুল, পুলিশের চাপে পণের টাকা ফেরাল ‘গুণধর’ পাত্র ]
মালদহের জেলা বনাধিকারিক জানিয়েছেন, মাস খানেক আগেও মালদহে গঙ্গায় কুমির দেখা গিয়েছে। সেটিকে পঞ্চানন্দপুরের কাছে একজন জেলে দেখতে পেয়েছিলেন। সম্ভবত সেই কুমিরটিই গঙ্গায় ঘোরাফেরা করছে। কখনও ফরাক্কায় তো কখনও বৈষ্ণবনগর এলাকায় দেখা যাচ্ছে। হতে পারে জলের স্রোতের টানে সেই কুমিরই সেতু টপকে ডাউনস্ট্রিমে চলে গিয়েছে। কিংবা বাংলাদেশের পদ্মার দিক থেকে উজানে চলে এসেছে অন্য একটি কুমির বলেও অনুমান মালদহের জেলা বনকর্তার। তিনি বলেন, “গঙ্গায় কুমির রয়েছে। জলের কুমির জলেই বাস করবে। তাকে শান্তিতে বাস করতে দিতে হবে। শীতকালে মাঝেমধ্যে কুমির ডাঙ্গায় ওঠে রোদ পোহাতে। আবার জলে নেমে যায়। বন দপ্তরের লোক গিয়ে কি জলের কুমিরকে ডাঙ্গায় তুলে আনবে? সেটা হয় নাকি? আমরা পুলিশকে বলেছি, কুমিরকে যাতে কেউ উত্যক্ত না করেন। কেউ উত্যক্ত করলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
[ এনজেপি নয়, দার্জিলিং মেল এবার ছাড়বে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে! ]
ফরাক্কা সেতু লাগোয়া মালদহের ভাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা কাউসার আলি, রিয়াজুদ্দিন মোমিনরা জানান, সোমবার বিকেলে কুমিরটিকে ডাঙ্গায় উঠে আসতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ ডাঙ্গায় কাটিয়ে আবার জলে নেমে পড়ছে। কচিকাঁচাদের নিয়ে গ্রামবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন। এদিন বৈষ্ণবনগর থানার আইসি সঞ্জয় বিশ্বাস নিজেই ওই এলাকায় সরজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান। পুলিশের তরফেও এলাকার মানুষজনকে সতর্কে থাকতে বলা হয়েছে।