বাবুল হক, মালদহ: ‘সবথেকে বড়’। দর্শনার্থী টানতে এটাই এখন পুজো উদ্যোক্তাদের ক্যাচলাইন। দেশপ্রিয় পার্কের পুজো থেকে বড় হওয়ার যে লড়াই শুরু হয়েছিল তার দৌড় দেখা যাচ্ছে সরস্বতী পুজোতেও। ওল্ড মালদহের বাঘাযতীন সংঘ এবার বাগদেবীর আরাধনায় ৩১ ফুট প্রতিমা বানিয়েছে। আয়োজকদের দাবি এটাই বাংলার সবথেকে বড় সরস্বতী।
[কেন সরস্বতী পুজোর আগে কুল খায় না ছাত্র-ছাত্রীরা?]
তিনি বিদ্যার দেবী। যার অধিষ্ঠান স্কুল, কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। মা দুর্গার এই সন্তানকে নিয়ে যত আহ্লাদ পড়ুয়াদের। তবে তাতে কিছু দিন আগে থেকেই ভাগ বসিয়েছে ক্লাবগুলো। এখন সরস্বতীও সর্বজনীন। বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলির দৌলতে বাণী বন্দনাতেও থিমের রমরমা। সেই উৎসাহের স্রোত এবার উত্তরবঙ্গে। পাঁচ বা দশ হাত নয় গুনে গুনে একত্রিশ ফুট হচ্ছে দেবী সরস্বতীর মূর্তি। ওল্ড মালদহের বাঘাযতীন সংঘ এবার উচ্চতা দিয়েই দর্শনার্থীদের চমকে দিতে যায়। মঙ্গলবাড়ি এলাকার এই ক্লাবের দুর্গাপুজোয় বেশ নাম-ডাক আছে। পুজো কমিটির সম্পাদক অজয় কুণ্ডুর দাবি এটাই সবথেকে বড় সরস্বতী। বহর শুধু উচ্চতা নয়, পুজোতেও। চতুর্থী অর্থাৎ রবিবার পুজোর উদ্বোধন হয়ে গেল।
[সামান্য ইরেজার দিয়ে সরস্বতী বানিয়ে নজির বাংলার এই শিল্পীর]
ওল্ড মালদহের এই পুজো আবার এক অর্থে সর্বধর্মে মিলনস্থল। ক্লাব সভাপতি অসীম ঘোষ বা কর্তা অজয় কুণ্ডুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন জাহাঙ্গির আলম, জনি শেখরা। তাদের প্রতিমা একেবারে নিজস্ব ভাবনার। মণ্ডপের পিছনে পাহাড়ের দৃশ্য রয়েছে। দেবীর পাশে রয়েছেন মহাদেব। সরস্বতীর পাশে রয়েছে সুদৃশ্য আলোকসজ্জা। মালদহের আইহোরের মৃৎশিল্পী নিরঞ্জন সিংহ ও তাপস সিংহ মিলে এই সুউচ্চ প্রতিমা তৈরি করেছেন। সময় লেগেছে মাস দুয়েক। মূলত বাঁশ, প্লাইউড, কাঠ, প্লাস্টার অব প্যারিস, রং এবং মাটি দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রতিমা। এইসব করতে করতে বাজেট লক্ষাধিক টাকা পেরিয়েছে।
[সরস্বতী পুজোয় ব্যাপক বিক্রি, আপেল কুল ফলিয়ে স্বনির্ভর ক্ষীরগ্রাম]
গত বছর মালদহ শহরে ৫১ ফুটের দুর্গা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় উচ্চতা কমাতে হয়। মালদহের মানুষ বলছেন সরস্বতী গড়ে সেই আক্ষেপ মেটালেন বাঘাযতীন সংঘের উদ্যোক্তারা। সবথেকে বড় সরস্বতী দেখতে পড়ুয়াদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে পুজো মণ্ডপে।
ছবি ও ভিডিও: হরেন চৌধুরি