সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সৌজন্যের নয়া নজির গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা। বৃহস্পতিবার টুইটারে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখেছেন, ‘রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।’
Birthday greetings to Buddhadeb Bhattacharya, former Chief Minister of West Bengal
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 1, 2018
শুধু শুভেচ্ছা জানিয়েই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর পাম অ্যাভিনিউয়ের আবাসনের মালিকানাও তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। বুধবারই এই ব্যাপারে আবাসন দপ্তরের সচিব খলিল আহমেদকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মালিকানা হস্তান্তরের ব্যাপারে মাস ছয়েক আগেই ফাইলে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সই করলেও কেন ঢিলেমি হচ্ছে, সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ফ্ল্যাটের পরিকাঠামোগত যাতে কোনও সমস্যা না থাকে, সেদিকেও নজর দিতে বলেছেন মমতা। উল্লেখ্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাথরুম ও ফ্ল্যাটের কিছু অংশ জীর্ণ হয়ে পড়েছে। সে ব্যাপারে মমতার কাছে খবর আসার পরই তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সবটা সারাইয়ের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বিধানসভায় নিজের ঘরে বসেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের খোঁজ নিয়ে কাজে নামতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি ওই ফ্ল্যাটের চারপাশে জঞ্জাল-আবর্জনাও সাফাই করতে বলেছেন তিনি। সিপিএম নীতিগতভাবে বুদ্ধবাবুর ফ্ল্যাট সারাইয়ের জন্য রাজ্য সরকারকে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
প্রাক্তনের প্রতি বর্তমান মুখমন্ত্রীর এই মানবিক আচরণকে স্বাগত জানাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। তবে এর পাশাপাশি উঠে আসছে রাজনৈতিক তত্ত্বও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিপিএম নয়, তৃণমূলের আসল শত্রু এখন বিজেপি। মমতা চান, ত্রিপুরায় সিপিএম আবারও জিতুক। কিন্তু বিজেপি যেন জিততে না পারে। খোদ মমতাও অবশ্য এই কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। কিন্তু সিপিএমের ব্যবহারে মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিজেপি বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে তৃণমূল থাকলে এড়িয়ে যাচ্ছে সিপিএম। কেন? বুধবার বিধানসভায় এই প্রসঙ্গেই বামেদের তুলোধোনাও করেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, অহংকারের জন্যই ত্রিপুরায় পতনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সিপিএম। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিজেপি পূর্বাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য দখল করতে নেমেছে। কিন্তু সিপিএম দাঁড়িয়ে স্রেফ দেখছে। বিজেপিকে ঠেকানোর চেয়ে যেন তৃণমূলকে ঠেকানো তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মমতার কথায়, “ত্রিপুরাটাও যাব যাব করছে। চাই না যাক। অহংকারের জন্যই এই পতন। আপনারা ওখানে থাকলে খুশি হতাম। সেটা বৃহত্তর কারণে।
ত্রিপুরার ফল বের হবে আগামী ৩ মার্চ। বিজেপি সেখানের মাটিতে শূন্য থেকে শুরু করে ফসল ফলাতে এগোচ্ছে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। সেই প্রেক্ষিতে মমতার মন্তব্য উল্লেখযোগ্য। তিনি এবার ত্রিপুরায় নিজে ভোট প্রচারেও যাননি। তবে হাভেভাবে বুঝিয়েছেন, ভোটের ফলে সিপিএমের হার হলে তা হবে তাদের অহংকারের জন্য। বৃহত্তর কারণেই দেশজুড়ে বিজেপির বিরোধিতায় সিপিএমকে পাশে চেয়েছিল তৃণমূল। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে সিপিএমের সঙ্গ নিতে তৃণমূলের যে আপত্তি নেই, তাও বুঝিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.