সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পেশায় দিনমজুর। কোনওদিন রোজগার হলে তবেই খাওয়া জোটে পরিবারের। এর মধ্যে আবার নয় নয় করে দশ সন্তানের বাবা লিচু বাউরি। পেশায় দিনমজুর লিচু সদ্য বাবা হয়। দশম সন্তান জন্ম হওয়ার পর থেকে তাঁর মেজাজ গরম হয়ে যায়। পুত্রসন্তানকে বস্তাবন্দি করে জলে ফেলতে গিয়েছিল। তখনই বিপত্তি। এলাকার বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় ওই ব্যক্তি। লিচু ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পশ্চিম বর্ধমানের বুদবুদ বাজারের মসজিদ পাড়ায় এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে।
[শীতের রাতে হাঁড়িয়ার টানে হাজির ‘জগাই-মাধাই’, নাজেহাল গ্রামবাসী]
গতি শনিবার রাতে লিচুর স্ত্রী ছায়া পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। আরও এক সন্তানের ভরণপোষণ দুঃসাধ্য হবে ভেবে সন্তানকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় লিচু। এমনই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। এরপর সদ্যোজাতকে শ্বাসরোধ করে মেরে বস্তায় ভিতর ঢুকিয়ে পাশের পুকুরে ফেলতে যায় ওই ব্যক্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা লিচুর মতলব বুঝে যান। লিচুকে ধরে রেখে পুকুর থেকে বস্তা তোলা হয়। বস্তা থেকে বাচ্চার লাশ দেখে উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় গণপিটুনি। গ্রামবাসীদের চাপে লিচু স্বীকার নেয় সংসারে অভাবের জন্য বাধ্য হয়ে সেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে লিচুর স্ত্রীও ঘটনাস্থলে যায়। স্বামীর মতো তাকেও আটকে রাখেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, সংসারে টানাটানি থাকতে পারে। তাই বলে সন্তানের মুখে কাপড় গুঁজে খুন কোনওভাবে মানা যায় না। যাদের বাড়িতে সন্তান নেই তাদের ফুটফুটে বাচ্চাটিকে দেওয়া যেত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
[ইনজেকশনে ভয়! সরকারি হাসপাতাল থেকে লাফ মহিলার]
ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে লিচু বাউরি ও তার স্ত্রী ছায়া বাউরিকে উদ্ধার করে বুদবুদ থানার পুলিশ। যদিও থানায় দম্পতি থানায় অবশ্য অন্য তত্ত্ব খাড়া করেন। তারা পুলিশের কাছে দাবি করেন নবজাতক মারা যাওয়ার পর দেহ পুকুরের পাড়ে পুঁততে গিয়েছিল। এই নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের কর্তা কমল বৈরাগ্য জানান, মৃত নবজাতকের ময়নাতদন্ত করা হবে। মৃতের মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
ছবি: উদয়ন গুহ রায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.