Advertisement
Advertisement

Breaking News

Man chops wife's hand

তালিবানি মানসিকতা! স্ত্রী সরকারি চাকরি পাওয়ায় হিংসা, হাত কেটে ‘শাস্তি’ বেকার স্বামীর

ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত।

Man chops wife's hand after she gets government job

ছবি: জয়ন্ত দাস

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:June 6, 2022 9:56 am
  • Updated:June 6, 2022 11:43 am

ধীমান রায়, কাটোয়া: সরকারি চাকরি করতে গেলে হাতছাড়া হয়ে যাবে স্ত্রী। এই অভিযোগে স্ত্রীর হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি সেই মহিলা। আহত মহিলার নাম রেণু খাতুন। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করছিলেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত স্বামী শরিফুল শেখ এবং তার পরিবারের লোকজন।

কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি রেণু খাতুনের। তাঁর বাপেরবাড়ি কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামে। জানা যায়, চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের পাঁচ মেয়ে ও তিন ছেলে। ছোট মেয়ে রেণু। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কোজলসা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখের একমাত্র ছেলে শের মহম্মদ শেখ ওরফে শরিফুলের সঙ্গে রেণুর বিয়ে হয়। রেণুর দাদা রিপন শেখ জানান, পড়াশোনা করার সময়েই তাঁর বোনের সঙ্গে শরিফুলের পরিচয় ছিল। পরে বিয়ে হয়। যদিও দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয় রেণু ও শরিফুলের। রেণুর বাবা আজিজুল হক জানান মেয়ের বিয়েতে তিনি নগদ এক লক্ষ টাকা, আট ভরি গয়না, একটি স্কুটি ও আনুষাঙ্গিক আরও কিছু জিনিস যৌতুক হিসাবে দিয়েছিলেন।

Advertisement

রেণু নিজে নার্সিংয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।  দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স পদে চাকরি করছিলেন। এরপর সরকারি চাকরিতে পরীক্ষা দিয়ে তিনি উত্তীর্ণ হন। কয়েকদিন আগেই চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়ে প্যানেলভুক্ত হয়ে যান। শুধু চাকরিতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। তার আগেই ঘটে এই ঘটনা। রিপন শেখ বলেন, “সরকারি চাকরি পাকা হয়ে গিয়েছে বলে আমার বোন দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি থেকে ইস্তফাপত্র জমা দিতে গিয়েছিল। শনিবার বাড়ি ফিরে প্রথমে আমাদের বাড়িতে আসে। তারপর রাতে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। রাতেই খবর পাই বোনের হাত কেটে নেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের খাবারে মিলল কেঁচো! তদন্তের নির্দেশ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের]

আজিজুল হক বলেন, “মেয়ে আমাদের বারবার বলছিল ওকে চাকরি করতে দেবে না। সেজন্য আমার জামাই, মেয়ের শ্বশুর-শাশুড়ি চাপ দিচ্ছিল। মেয়ে কিন্তু সরকারি চাকরির সুযোগ ছাড়তে রাজি ছিল না। কিন্তু ওরা যে এমন করতে পারে ভাবিনি।” আজিজুল হকের বক্তব্য অনুযায়ী শনিবার রাতে তার জামাই শরিফুল শেখ কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করে। রাত এগারোটা নাগাদ রেণু যখন শুয়ে পড়েছিলেন সে সময় দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রেণুর ওপর চড়াও হয় শরিফুল। ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারে। রেণুর ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

রেণুর চিৎকারে প্রতিবেশীদের ঘুম ভেঙে যায়। রাতেই তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই আপাতত ভরতি তিনি। রেণুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে এই বেসরকারি হাসপাতালে চাকরির সময় স্ত্রীর সঙ্গেই থাকত শরিফুল। শরিফুলের বাবা সিরাজ শেখের গ্রামেই একটি মুদিখানা দোকান আছে। মাসখানেক আগে বাড়িতে চলে আসার পর বাবার দোকানেই বসত শরিফুল।

আজিজুল হক বলেন,”ওদের ধারণা ছিল আমার মেয়ে চাকরি করতে গেলে আর বোধহয় স্বামীর ঘর করবে না।” পুলিশ জানায় এই ঘটনায় শরিফুল, তার বাবা-মা ও দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পলাতক শরিফুল রেণুর যাবতীয় সার্টিফিকেট ও চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ের কাগজপত্রও সঙ্গে নিয়ে ফেরার হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ রিপন শেখের। বিষয়টির সঙ্গে তালিবানি মানসিকতার মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই উত্তরপ্রদেশে মাহোবা জেলায় ছেলের জন্ম না দেওয়ায় এক মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিও।

[আরও পড়ুন: জামাই ষষ্ঠীর দিন ব্যতিক্রমী আয়োজন, বালুরঘাটে মেয়েদের মঙ্গল কামনায় পালিত ‘কন্যাশ্রী ষষ্ঠী’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ