ধীমান রায়, কাটোয়া: একবার প্রতিবেশীর অনুরোধে রক্তদান করে তাঁর মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। তার বিনিময়ে প্রবীণ প্রতিবেশী তাঁকে প্রাণভরে আশীর্বাদ করেন। ওই ঘটনা তার মনে খুব দাগ কেটেছিল। সেই থেকে রক্তদান করাই জীবনের এক ব্রত কাটোয়ার জয়দেব দত্তর কাছে। রক্তদানের পাশাপাশি সেলিব্রেটিদের সই কার শংসাপত্র সংগ্রহ করা শখ জয়দেববাবুর। বয়স ৩৯। এখনও পর্যন্ত ৫২ বার রক্তদান করে নজির গড়েছেন তিনি।
[জন্মভূমি রেজিনগরে গান স্যালুটে শহিদকে শেষ শ্রদ্ধা]
কাটোয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বেলতলাপাড়ায় থাকেন জয়দেব দত্ত। পেশায় ছোট ব্যবসায়ী। বাড়িতে আছেন স্ত্রী মিনু দাস দত্ত। তবে নি:সন্তান দম্পতি। জয়দেববাবু জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি ছিল মুর্শিদাবাদের সালারে। সেখান থেকে বেশ কয়েকবছর আগে কাটোয়ায় চলে আসেন। জয়দেব দত্তর রক্তদানের সূত্রপাত ১৯৯৯ সালে। তিনি জানিয়েছেন, ওই বছর প্রতিবেশীর গর্ভবতী মেয়ে হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু শরীরে রক্ত কম থাকায় অস্ত্রপচার হচ্ছিল না। তখন বৃদ্ধ প্রতিবেশীর করুণ অবস্থা। তিনি বিভিন্নজনের কাছে ঘুরে ঘুরে রক্ত জোগাড় করতে পারেননি। জয়দেববাবু বলেন, ”ওই মেয়েটির রক্ত ও পজেটিভ গ্রুপের। আমার সঙ্গে মিলে যায়। আমি রক্ত দিতে প্রতিবেশীর সঙ্গে হাসপাতালে চলে যাই। রক্ত দেওয়ার পর সন্তান প্রসব করানো হয়। প্রসূতি ও শিশু দুজনেকেই সুস্থ দেখি”। জয়দেব বলেন, ”ওদিন মেয়েটির বাবা আমাকে খুব আর্শীবাদ করেন। আনন্দে ওনার দু চোখ দিয়ে জল বেড়িয়ে আসে। সেদিন আমিও খুব আনন্দ পেয়েছিলান একজনের উপকার করে। সেই থেকেই রক্তদান করে আসছি নিয়মিত”।
[মাত্র ১৮০ টাকা উদ্ধারে পুলিশের দ্বারস্থ, হইচই জলপাইগুড়িতে]
জয়দেববাবু জানিয়েছেন, একবার কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ইডেন গার্ডেন্সে একটি অনুষ্ঠানে রক্তদান করলে ব্রায়ান লারার সই করা সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। ২০১৪ সালে আমি সেই শিবিরে রক্ত দিই। তারপর কলকাতায় বিভিন্ন রক্তদান শিবিরে গিয়েছি। এখনও যাই। জয়দেববাবু জানিয়েছেন কফিহাউসের প্রতিষ্ঠাদিবসে রক্তদান করে তিনি বেশ কয়েকজন সাহিত্যিকের সই করা শংসাপত্র পেয়েছেন। এটা তার শখ হয়ে দাড়িয়েছে। বড় বড় অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেন। রক্তদান করেন। আর সেলিব্রটিদের প্রসংশা কুড়ান। জয়দেববাবু বলেন, আমার লক্ষ্য জীবনে হাজারবার রক্তদান করব। এতেই আমার জীবন সার্থক হবে বলে মনে করি।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.