Advertisement
Advertisement

সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন প্রৌঢ়, অভিযুক্ত সহোদর

নিহতের স্ত্রী কেতুগ্রাম থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Man kills brother over property dispute in Katwa
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 15, 2018 8:11 pm
  • Updated:June 15, 2018 8:11 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রকাশ্যে রাস্তায় বাইক দাঁড় করিয়ে যুবককে খুন করল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কেতুগ্রামের আনখোনা গ্রামে। পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, পাড়ার দুই যুবক বাইকে চাপিয়ে প্রতিবেশীকে স্টেশন থেকে বাড়ি নিয়ে আসছিলেন। মাঝরাস্তায় বাইক থামিয়ে প্রতিবেশী ওই যুবককে খুন করে সশস্ত্র দুস্কৃতীরা। ঘটনার পর ছিনতাইয়ের গল্প ফেঁদেছিল সঙ্গী দুই যুবক। কিন্তু পুলিশের জেরার মুখে ফাঁস হল আসল রহস্য। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে খুনের পিছনে রয়েছে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সুখময় মিস্ত্রি (৩৮)। কেতুগ্রামের আনখোনা গ্রামের বাসিন্দা সুখময় মিস্ত্রিরা দু’ভাই। ভাই মৃন্ময় মিস্ত্রি একই বাড়িতে পৃথক সংসারে থাকেন। মা করুণাদেবী থাকেন ছোট ছেলের কাছে। জানা গিয়েছে, বাবা সুনীল মিস্ত্রি প্রায় ৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। তারপর থেকে তাঁর হদিশ পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নেটদুনিয়ায় নগ্ন ছবি পোস্ট করে শ্রমিককে হেনস্তা, উত্তাল তেহট্ট ]

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃন্ময় চাষাবাদ করেন। সুখময় রেলের কনট্রাক্টরের কাছে কাজ করতেন। নিহতের স্ত্রী চিত্রা মিস্ত্রি জানিয়েছেন, সালর স্টেশনে নেমে তাঁর স্বামী বাড়ি ফিরতেন। বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী দুই যুবক কৃষ্ণ রায় ও অনুপম পাল বাইক নিয়ে দুজনে মিলে সালার স্টেশন থেকে সুখময়বাবুকে আনতে গিয়েছিলেন। তারপর রাতে বাড়িতে খবর আসে খুন হয়ে গিয়েছেন সুখময়বাবু।

কৃষ্ণ ও অনুপম জানিয়েছেন, তাঁরা সুখময়কে বাইকে চাপিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইছাপুর ও হলদি গ্রামের মাঝে ৬ জন দুস্কৃতী তাদের দাঁড় করায়। তাদের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। তারপর ভোজালি দিয়ে সুখময়কে আঘাত করে। মারধর করে কৃষ্ণকে ও অনুপমকে। তবে অনুপম ছুটে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন সুখময়। দুস্কৃতীরা চলে যাওয়ার পর অনুপম এসে চিৎকার চেঁচামেচি করে। স্থানীয়রা সুখময় ও কৃষ্ণকে উদ্ধার করে কাঁদরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কৃষ্ণকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁরও পিঠে আঘাত লেগেছে।

পেনশন হাতাতে বেধড়ক মারধর বউমার, প্রশাসনের দ্বারস্থ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ]

জানা গিয়েছে, আনখোনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ রায় কাঁদরা কলেজের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অনুপম এবছর উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানিয়েছিল ছিনতাই করতে এসে সুখময়কে খুন করেছে দুস্কৃতীরা। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে দেখে কারও কাছে কিছুই নেয়নি ওই দুস্কৃতীদল। তখন অনুপমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ সুখময় ও মৃন্ময়ের ঝামেলার কথা জানতে পারে। এরপর নিহতের স্ত্রী চিত্রাদেবী কেতুগ্রাম থানায় তাঁর দেওর মৃন্ময়, শ্বাশুড়ি করুণা, জা আগমনী এবং জায়ের দাদা মানব মিস্ত্রির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। চিত্রাদেবীর অভিযোগ, তাঁর দেওর অনেকদিন ধরেই সুখময়কে খুনের হুমকি দিচ্ছিলেন।

জানা গিয়েছে, পারিবারিক ১২ বিঘা সম্পত্তি ছিল সুখময়দের। ২ বছর আগে ভাগ হয়। সুখময়বাবু ৪ বিঘা ভাগ পান। বাকি দু’ভাগ পেয়েছিলেন ভাই ও মা। বসতবাড়িও ভাগ হয়ে গিয়েছিল। তবে বাড়ি ভাগ হওয়ার পর কিছুটা অংশ দাম দিয়ে কিনে নিয়েছিলেন সুখময়। চিত্রাদেবীর অভিযোগ, সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তাঁর স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে।

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ