Advertisement
Advertisement

মাও হানায় নিহত পরিবারের সদস্যকে সভাধিপতির আসনে প্রার্থী তৃণমূলের

কুমকুম সিং সর্দারের লড়াইকে সম্মান জানাতেই তাঁকে বেছে নেওয়া হল।

Mao victim’s kin to contest Panchayat polls on TMC ticket from Purulia
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 9, 2018 4:27 pm
  • Updated:April 9, 2018 6:24 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মাও হানায় নিহত পরিবারের সদস্যকে জেলা পরিষদের সভাধিপতির আসনে প্রার্থী করল তৃণমূল। সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন পুরুলিয়া জেলা পরিষদে বলরামপুরের দশ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা করেন কুমকুম সিং সর্দার।

জঙ্গলমহল বলরামপুরের অযোধ্যা পাহাড়তলির খুনটাঁড় গ্রামের বাসিন্দা কুমকুম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। এবার তাঁকে দল আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে জেলা পরিষদে প্রার্থী করল। তবে তৃণমূলের এই আদিবাসী নেত্রী ১৯৯৮ সালে ঘাটবেড়া–কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতেরও সদস্য ছিলেন। ফলে পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনায় তাঁর দক্ষতা দেখেই এবার জেলা পরিষদে নিয়ে আসছে জেলা তৃণমূল।

Advertisement

[বিজেপি প্রার্থীর মেয়েকে মারধরের অভিযোগে উত্তপ্ত বারুইপুর]

২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধেয় মাওবাদীরা অযোধ্যা পাহাড় থেকে নেমে এসে কুমকুম সিং সর্দারদের ঘর ঘিরে ধরেছিল। সেই সময় বছর পঁয়তাল্লিশের কুমকুম দেবীই মাওবাদীদের বিরুদ্ধে তির-ধনুক হাতে নিয়ে রুখে দাঁড়ান। কিন্তু শেষমেষ একে-৪৭, থ্রি নট থ্রি রাইফেলের কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। তাঁর বাবা তথা ওই অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় ছাতরাজেরা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার সিং ও কৃষক ছোট ভাই রমেশ ওরফে বাঁকুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঘরের পাশেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই হাড় হিম করা ঘটনা আজও সবসময় চোখের সামনে ভাসে কুমকুম দেবীর। আর সেই স্মৃতিই তাঁকে আরও শক্ত করে এই জঙ্গলমহলের উন্নয়নের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে। কুমকুম দেবী বলেন, “আর কোনওদিন ওদের এখানে আসতে দেব না। সেই সময় আমি রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। ফের ওরা এই পাহাড়ে আসতে চাইলে এলাকার মানুষ প্রতিরোধ করবেন। কারণ এই পাহাড়তলিতে এলাকার মানুষের যা দাবি ছিল আমরা তা পূরণ করেছি। এই পাহাড়তলিতে এখন শুধুই উন্নয়নের হাওয়া।”

Advertisement

20180409_142850

সেইসময় মাওবাদী হামলার পর এই এলাকার বহু মানুষ আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। পাহাড়তলির খুনটাঁড় গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ঝাড়খন্ডে আশ্রয় নেন। কিন্তু এই ভিটে বাড়ি আকঁড়ে পড়ে থাকেন কুমকুম। বলা যায় ওই বাড়িতে থেকেই এলাকার পাহারাদার হয়ে ছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের পর থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করে চলেছেন। এই এলাকা থেকেই গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে জিতে সভাধিপতি হন সৃষ্টিধর মাহাতো। এবার তফসিলি উপজাতি মহিলার জন্য সংরক্ষিত হয়েছে এই এলাকা। তাই সভাধিপতির আসনেই এই লড়াকু মহিলাকে প্রার্থী করল বলরামপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। বলরামপুর ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুদীপ মাহাতো বলেন, “সভাধিপতির মতো কুমকুম দেবীও আমাদের কাছে হেভিওয়েট। তাঁর লড়াইকে আমরা কুর্নিশ জানাই। সেই কথা ভেবেই তাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রার্থী করলাম।”

ছবি: অমিত সিং দেও

[মনোনয়নের শেষ দিনে গুলি চলল মগরাহাটে, জখম ২ পুলিশকর্মী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ