সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: গৌরী লঙ্কেশ, এম এম কালবর্গীর খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। দুই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে উঠে এসেছিল এক গুরুজির নাম। যার প্রকৃত নাম, প্রতাপ হাজরা। কর্ণাটকের সিটের চার্জশিটেও তার নাম উল্লেখ ছিল। কলকাতা পুলিশের সাহায্যে দক্ষিণ ২৪ পরগণার উস্তি থেকে তাকে পাকড়াও করে পুণে পুলিশ। একাধিক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে তার যোগ ছিল বলেও খবর মিলেছে। এমনকী একসময় বিজেপিতেও যোগ দিতে চেয়েছিল সে। তবে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব তাকে দলে নিতে রাজি ছিলেন না বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা বিজেপির নেতা অভিজিৎ দাস। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে তাকে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়েও প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত প্রতাপ বরাবর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রথমদিকে হিন্দু সংহতি মঞ্চের সঙ্গে যোগ থাকলে পরে দূরত্ব বেড়েছিল। বরং পরের দিকে ম্যাঙ্গালুরু একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। কর্ণাটকের পুলিশের চার্জশিট অনুযায়ী, ২০১৫ সালে কালবর্গি হত্যার আগে ম্যাঙ্গালুরুতে রবার বাগিচায় তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল অভিযুক্তরা। গণেশ মিশকিন বা প্রবীণ প্রকাশ চতুরের মতো অভিযুক্তদের বয়ান অনুযায়ী, ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে অভিযুক্তদের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার, বিস্ফোরক বানানো শেখানো হয়েছিল। শিখিয়েছিলেন কয়েকজন প্রশিক্ষক। তাদের মধ্যেই উস্তির এই প্রতাপ হাজরা অন্যতম বলে দাবি পুলিশের।
[আরও পড়ুন : CAA ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে কড়া বার্তা ভারতের]
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে মারাঠি লেখক এবং সমাজকর্মী চিকিৎসক নরেন্দ্র দাভোলকর খুনে প্রধান অভিযুক্ত শারদ কালসকরের বয়ানেও এসেছে প্রতাপের নাম। কিন্তু প্রতাপের প্রতিবেশীরা একথা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না। বরং তাদের দাবি, রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছে প্রতাপ। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০ জানুয়ারি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর সাহায্যে পুণে পুলিশ উস্তি থেকে প্রতাপকে গ্রেপ্তার করে। তাদের অভিযোগ, প্রতাপ হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। দেশজুড়ে একাধিক নাশকতার সঙ্গেও নাম জড়িয়েছে তার।