নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগরে মতুয়াদের জনসভায় যোগ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। ঠাকুরবাড়ির দালানেও প্রথমবার পা রাখার কথা। সেইমতো প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই সফরও বোধহয় মসৃণ হচ্ছে না। ঠাকুরবাড়ি সূত্রে খবর, সোমবার রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মতুয়া মহাসংঘের প্রধান বড়মা বীণাপানি দেবী | মঙ্গলবার ঠাকুরবাড়িতে যান চিকিৎসকদের এক প্রতিনিধি দল। নবতিপর বীণাপানি দেবীর শারীরিক পরীক্ষা করে তাঁরা জানান, ঠান্ডায় বুকে কফ জমে সংক্রমণ হয়েছে, তাতেই এতটা অসুস্থ বড়মা। তিনি সুস্থ না হলে, হয় তো ২ তারিখ প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাক্ষাৎ পাবেন না।
টার্গেট মতুয়া ভোট ব্যাংক, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শাহের
বীণাপানি দেবীর অসুস্থতা ছাড়াও ঠাকুরবাড়ির অন্দরে অশান্তি ছড়িয়েছে আরও। ২৮ তারিখ থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে বনগাঁর শ্রীধাম ময়দানে। ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তারই মাঝে ২ তারিখ রাজনৈতিক সভা বাতিল করে শুধুমাত্র মতুয়াদের সেই অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্দেশে দেবেন ভাষণও। ইতিমধ্যেই খুঁটি পুজোর মাধ্যমে ঠাকুরবাড়ির কামনা সাগর পাড়ের মাঠে মঞ্চ বাঁধার কাজও শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল। ঠাকুরবাড়ির বড় বউমা তৃণমূল সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আমিই তো সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি। আমাদের সংগঠনের তরফে তো প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাহলে প্রধানমন্ত্রী এই সমাবেশে আসছেন কেন?” পাশাপাশি তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মতুয়ারা তো জনসভা করছে না। তাহলে সভার আহ্বায়ক কারা, তাও বোঝা যাচ্ছে না।’’ এমন কি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘স্বার্থান্বেষী’ বলেও কটাক্ষ করেন। সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি নেতা, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের পুত্র শান্তনু ঠাকুর স্পষ্ট জানান, ‘‘সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের প্যাডেই চিঠি লিখে ২ ফেব্রুয়ারির সভায় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এমন কি প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিয়ে বড়মার অনুমতিও নেওয়া হয়েছে।’’
মোটের উপর প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে রাজনীতির পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী ঠাকুরবাড়ির অন্দরের দুই রাজনৈতিক দলের। গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় জানিয়েছিলেন যে ২ ফেব্রুয়ারি মতুয়াদের সভায় প্রধানমন্ত্রী যোগ দিলেও, ভারতীয় জনতা পার্টির কোনও পতাকা, ফেস্টুন, ব্যানারের চিহ্নমাত্র সভামঞ্চের আশেপাশে চোখে পড়বে না। তা সত্ত্বেও মতুয়াদের সভায় তাঁর যোগদান নিয়ে রাজনীতি থেকেই যাচ্ছে।